বন্ধুদের অনুপ্রেরণায় আজ তারা উদ্যোক্তা
অনন্যা মেহপার আজাদ ও অন্তরা মেহরুখ আজাদ। তারা জমজ বোন। দু’জনই চারুকলা থেকে পড়াশোনা করেছেন। তাদের কাজগুলো মূলত ওয়্যারেবল আর্ট, যা বলতে বুঝি হাতে আঁকা শাড়ি, অ্যাক্সেসরিজ নিয়ে তাদের কাজ। তাদের উদ্যোগের নাম দি মালাকাইট ক্যাসকেট। তাদের এ উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আরিফুল ইসলাম আরমান-
কীভাবে এ উদ্যোগ নিতে আগ্রহী হলেন?
অনন্যা ও অন্তরা: পড়াশোনার শেষের দিকে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি বন্ধুরা সবাই যখন চাকরি খুঁজছিল; তখন এমন কিছু করতে চাচ্ছিলাম। যেটায় কাজের স্বাধীনতা থাকবে, আবার ছবি আঁকার মধ্যেও থাকা যাবে। যেহেতু সেটাই আমাদের প্রথম ভালোবাসা।
শুরুটা কীভাবে করলেন?
অনন্যা ও অন্তরা: বন্ধুদের অনুপ্রেরণায় সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা কাজের ছবি দেওয়া শুরু করি। শুরুটা আমাদের হয়েছিল ইনস্টাগ্রাম থেকে। প্রথম থেকেই আমরা সবার অনেক সাড়া পাই। তারপর এক বন্ধু আমাদের পক্ষে একটি শাড়ির ছবি হুটহাটে পোস্ট করে। সেখান থেকে আমরা অভাবনীয় সাড়া পাই। যেটা আমাদের কজের প্রতি কনফিডেন্সও বাড়িয়ে দেয়। এখন ফেসবুকে আমাদের ফলোয়ার প্রায় বিশ হাজার।
> আরও পড়ুন- উপস্থাপনাকেও পেশা হিসেবে নেওয়া যায় : সোনিয়া রিফাত
কোনো প্রতিবন্ধকতা এসেছে কি-না?
অনন্যা ও অন্তরা: আমাদের ব্যবসার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ডেলিভারি। যেহেতু আমরা সম্পূর্ণভাবে অনলাইনভিত্তিক। অনেক সময়ই ডেলিভারি সার্ভিসের জন্য নানাভাবে ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। ২০১৮ সালে আমাদের দুইটি শাড়ি ডেলিভারিম্যান থেকে ছিনতাই হয়।
কীভাবে এগিয়ে গেলেন?
অনন্যা ও অন্তরা: দুই বছরের কিছু বেশি সময়ে আমাদের ফেসবুক ফলোয়ার প্রায় বিশ হাজারের কাছাকাছি। এ সময়ে মানুষের যে প্রশংসা আর ভালোবাসা পাচ্ছি বা পেয়েছি, সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি মনে হয়। পছন্দের পোশাক পেয়ে যখন গ্রাহক সেটাকে আর্টপিস হিসেবে কনসিডার করে, সেটা আমাদের বড় অর্জন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কী করছেন?
অনন্যা ও অন্তরা: প্রচারণার ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত বিশাল একটি ভূমিকা রেখে এসেছেন আমাদের ক্রেতারা। মোটামুটি সবাই নিয়মিত তাদের পরিবার বা বন্ধুদের কাছে আমাদের রেফার করেছেন। পাশাপাশি ফেসবুকে প্রমোশনাল বুস্টিং মাঝে মাঝে করা হয়। যদিও তা খুব কম। সেগুলো মূলত বিশেষ বিশেষ উপলক্ষে।
> আরও পড়ুন- ভারতের অডিও ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কাজ করছি : বুশরা
আগামীতে পরিকল্পনা কী?
অনন্যা ও অন্তরা: যেহেতু আমাদের প্রোডাক্ট লাইন পুরোটাই হাতে আঁকা। তাই আমাদের সংখ্যা খুবই সীমিত। হাতে আঁকা জিনিসের প্রোডাকশন টাইম অনেক বেশি। একই রকম মান মেইনটেইন করাটাও কঠিন। তাই আপাতত আমাদের খুব বড় করার পরিকল্পনা নেই। পণ্যের মান নিয়ে আমরা কোন আপস করতে চাই না। আমাদের আরও একটি ইচ্ছা হলো, আমরা শতভাগ দেশি পণ্য নিয়ে কাজ করতে চাই। পণ্য বলতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিদেশি কাঁচামাল ব্যবহার করতেই হয়, যেটা আমরা শতকরা শূন্যতে আনতে চাই।
নতুন যারা এ ব্যবসায় আসতে চান, তাদের কী করা উচিত?
অনন্যা ও অন্তরা: নতুনদের জন্য বলবো, অনলাইনের বড় সুবিধা হচ্ছে খুব সহজেই ব্যবসা শুরু করা যায়। আলাদাভাবে তেমন কিছু লাগে না। আবার অসুবিধা হচ্ছে প্রতিযোগিতার বাজার অনেক বড়। টিকে থাকতে হলে নিজের কাজকে সেরকম প্রফেশনালভাবেই উপস্থাপন করা উচিত। অন্যের আর নিজের কাজকে সম্মান করতে হবে। যেহেতু সবকিছু এখন খুব সহজলভ্য। অনলাইনে অন্যের কাজ, ছবি কপি করার বিষয়টি খুব কমন। এটি একজন শিল্পীর জন্য খুবই পীড়াদায়ক।
এসইউ/এমএস