ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনে যে পদ পাচ্ছেন ইলন মাস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১:৫৭ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে নতুন করে প্রায় চার হাজার পদে নিয়োগ দিতে হয়। সেই তালিকায় মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা পর্যন্ত নির্ধারণ করেন তিনি। এই ধারাবাহিকতায় নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর একে একে তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যারা থাকবেন তাদের নাম ঘোষণা করছেন। খবর বিবিসির।

ইতোমধ্যেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে পিট হেগসেথ ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (স্বরাষ্ট্র) জন্য ক্রিস্টি নোয়েমের নাম জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মার্কো রুবিওকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যম।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপকভাবে সক্রিয় ছিলেন শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। অনুদানও দিয়েছেন প্রায় ২০ কোটি ডলার। অবশ্য ট্রাম্প জেতার পরে মাস্কের সম্পদ বাড়ছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার।

বিজয়ী ভাষণে বিশেষভাবে মাস্কের কথা বলেছেন ট্রাম্প। তার ভূঁয়সী প্রশংসাও করেছেন। আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, আগামী প্রশাসনে টেসলার মালিককে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে দেখা যেতে পারে।

অবশেষে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানালেন, ইলন মাস্ক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিবেক রামাস্বামীকে নতুন একটি দপ্তরের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন তিনি। ওই দপ্তরের নাম হবে ‌ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি।

আগে থেকেই আলোচনায় ছিল যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইলন মাস্ক সরকারি কর্মকাণ্ডে দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ করছেন। ট্রাম্প তার বিবৃতিতে লিখেছেন, এই দুজন অসাধারণ আমেরিকান মিলে সরকারি আমলাতন্ত্রের অবসান ঘটানোর পথ তৈরি করবেন।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের বাড়াবাড়ি ও অর্থের অপচয় রোধ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনে কাজ করবেন তারা যা সেইভ আমেরিকা উদ্যোগের জন্য অপরিহার্য। ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এজেন্সির সংক্ষিপ্ত রূপ ডিওজিই বা ডোজ। এর সঙ্গে ক্রিপ্টোকারেন্সি ডোজকয়েনের নামের মিল লক্ষণীয়। মাস্ক ডোজকয়েনকে ‌দ্য পিপলস ক্রিপ্টো বলে আখ্যায়িত করেছেন।

দপ্তরের দায়িত্ব পাওয়া অপর রিপাবলিকান বিবেক রামাস্বামী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। পরবর্তীতে অবশ্য ট্রাম্পের পক্ষে সোচ্চার থেকেছেন তিনি।

ট্রাম্পের চাকরিতে কী করবেন মাস্ক?
সরকারি দক্ষতা বিভাগ ঠিক কী কী কাজ করবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু এটাকে সরকারের গতানুগতিক কাঠামোর বাইরের একটি প্রতিষ্ঠান বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্পের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের বাইরে থেকে পরামর্শ এবং নির্দেশনা দেবে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি।

ট্রাম্প বলেন, এর লক্ষ্য সরকারের মধ্যে উদ্যোক্তার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসা। এটা হবে আমাদের সময়ের দ্য ম্যানহাটন প্রজেক্ট। ম্যানহাটন প্রজেক্টের মাধ্যমে আমেরিকার প্রথম পারমাণবিক বোমা তৈরি করা হয়েছিল। নতুন দপ্তরের প্রসঙ্গে সেই ঘটনার উল্লেখ করেন ট্রাম্প।

২০২৬ সালের ৪ জুলাইয়ের মধ্যে এই দপ্তরের কাজ সমাপ্ত করার সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন তিনি। ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মাস্ক ও রামাস্বামী। দুজনই একরকম হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন তাদের বক্তব্যে।

নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম এক্সের এক পোস্টের জবাবে ইলন মাস্ক লিখেছেন, এটা সিস্টেমের মধ্যে একটা শকওয়েভ হিসেবে আবির্ভূত হবে। সেইসঙ্গে সরকারি অপচয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে কারো জন্যই কাল হয়ে দাঁড়াবে। রামাস্বামীও তার এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, আমরা কোনো ভদ্রতা দেখাতে যাবো না।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক চলতি বছরের শুরুতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে তার সমর্থন ঘোষণা করেছিলেন। এর আগে ২০২২ সালে অবশ্য তিনি ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পতনের ইঙ্গিত দিয়ে মন্তব্য করেছিলেন যে, ট্রাম্পের টুপি খুলে ঝুলিয়ে রাখা এবং সূর্যাস্তের দিকে যাত্রা করার সময় এসেছে।

তবে সময় বদলেছে। প্রযুক্তি বিলিয়নিয়ার থেকে ট্রাম্পের অন্যতম দৃশ্যমান এবং সুপরিচিত সমর্থক হিসাবে প্রকাশ্যে এসেছেন ইলন মাস্ক। চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করতে ‘আমেরিকা পিএসি’ নামে একটা রাজনৈতিক অ্যাকশন কমিটি গঠন করেছিলেন তিনি। এই নির্বাচনী চক্রে সেখানে ২০ কোটি ডলার অনুদান দিয়েছেন মাস্ক।

টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান এবং সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটারের)-এর মালিক ইলন মাস্ক ভোটার রেজিস্ট্রেশন অভিযান (ভোটার নিবন্ধন অভিযান) চালু করেছিলেন। প্রচারের সমাপনী পর্বে এই অভিযানের আওতায় সুইং-স্টেটের যেকোনো একজন ভোটারকে প্রতিদিন ১০ লাখ ডলার উপহার দেওয়া হতো।

আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান হিসাবে রেজিস্ট্রেশন করেন তিনি। এরপর থেকেই তাকে অবৈধ অভিবাসন এবং ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারসহ একাধিক বিষয় নিয়ে সোচ্চার হতে দেখা যায়। ১৩ জুলাই পেনসিলভানিয়ার বাটলারে হত্যা প্রচেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পকে প্রথম সমর্থন দেওয়ার পর থেকে ইলন মাস্ক ট্রাম্পের প্রচারাভিযানের একটি অংশ হয়ে ওঠেন। সে সময় তিনি প্রায়ই সতর্কবার্তা দিয়ে আসছিলেন যে, শুধুমাত্র ট্রাম্পই আমেরিকার গণতন্ত্রকে বাঁচাতে পারেন।

টিটিএন