এমন কথা কেন বললেন ট্রাম্প?
ঈশ্বর আমাকে এ কারণেই বাঁচিয়ে রেখেছেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইলেকটোরাল ভোটে ম্যাজিক ফিগারের একেবারেই কাছাকাছি রয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ফলাফল ঘোষণা করা না হলেও ট্রাম্প এক ভাষণে নিজেকে জয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। বার্তা সংস্থা এপির তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ২৭৭টি ইলেকটোরাল ভোটে এগিয়ে আছেন। অপরদিকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এগিয়ে আছেন ২২৪টিতে।
এদিকে ট্রাম্প তার বিজয়ী ভাষণে বলেন, আমেরিকাকে বাঁচানোর জন্য ইশ্বর আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন। গত ১৩ জুলাই নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পের ওপর হামলা চালানো হয়। পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলারে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় হামলার শিকার হন তিনি। তার কানে গুলি লাগে। তবে সে যাত্রায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। ট্রাম্প সম্ভবত ওই হামলার কথা স্মরণ করেই ইশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সে সময় তার কানে গুলি লেগেছিল এবং হামলার পরপরই তিনি মাটিতে পড়ে যান, তার মুখমণ্ডলে রক্ত দেখা যায়। এই ঘটনার পর পরই সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা হামলাকারীকে গুলি করলে তিনি নিহত হন।
এদিকে গত সেপ্টেম্বরেও ট্রাম্পের ওপর হামলার চেষ্টা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর) ওয়েস্ট পাম বিচে ঘনিষ্ঠ বন্ধু স্টিভ উইটকফের সঙ্গে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল গলফ ক্লাবে সময় কাটানোর সময় তার ওপর হামলার চেষ্টা করেন এক ব্যক্তি।
ওই ঘটনার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভয় পাবেন না। আমি ভালো আছি এবং কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হননি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। তবে দুনিয়ায় এমন মানুষ আছে যারা আমাদের থামাতে যেকোনো কিছু করতে পারে। আমি আপনাদের জন্য লড়াই থামাবো না। আমি কখনো আত্মসমর্পণ করবো না। আমাকে সমর্থনের জন্য আপনাদের সবসময় ভালোবাসবো। আমাদের একতার মাধ্যমেই আমরা আমেরিকাকে আবারও মহান করবো।
এবারের নির্বাচনে জয়ের পেছনে নিজের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমি আমার পুরো পরিবারকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমার বাচ্চারা চমৎকার। প্রত্যেকেই ভাবেন তাদের সন্তানরা চমৎকার।
ট্রাম্প বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক, তাদের পরিবার এবং তাদের ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করবেন তিনি। তিনি বলেন, আমার শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত আমি আপনাদের জন্য লড়াই করে যাব। শক্তিশালী, নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ আমেরিকা না গড়ে তোলা পর্যন্ত আমি বিশ্রাম নেব না।
গত ১৩ জুলাই ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ওই ঘটনার পর থেকেই মূলত নির্বাচনের হাওয়া বদলে যেতে শুরু করে। কপালজোরে প্রাণে বেঁচে যাওয়া ট্রাম্প আসন্ন নির্বাচনী ভূমিধস জয় পেতে চলেছেন বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন বিভিন্ন পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষক।
এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, তিনি একটি ‘অসাধারণ বিজয়’ পেয়েছেন। তার দ্বিতীয় শাসনামল ‘আমেরিকার স্বর্ণযুগ’ হবে দাবি করে রিপাবলিকান নেতা আরও বলেন, এটি আমেরিকার মানুষের জন্য একটি অসাধারণ বিজয়, যা আমাদের আবার আমেরিকাকে মহান করতে সাহায্য করবে।
গত নির্বাচনে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি ট্রাম্প। ফলাফল, নির্বাচনে হার। কিন্তু এবার সেসব রাজ্যে দারুণভাবে ‘কামব্যাক’ করেছেন তিনি। বিশেষ করে যে পেনসিলভানিয়া রাজ্যে তিনি হামলার শিকার হয়েছেন সেখানে ১৯টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে মোট ২৬৭টি ভোট নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প, যা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে তার জয়কে বেশ এগিয়ে নিয়েছে।
এছাড়া নেভাদা, অ্যারিজোনা, উইসকনসিন, মিশিগান, মিনেসোটা, আলাস্কায়ও এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে গত নির্বাচনে সুবিধা করতে না পারলেও এবার দারুণভাবে ‘কামব্যাক’ করেছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
টিটিএন