মেক্সিকোয় মাদক চক্রের সংঘাত: এক মাসে প্রাণ গেলো ১৫০ জনের
মেক্সিকোর একটি মাদক চক্র নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে দলীয় সংঘাতে গত এক মাসে প্রায় ১৫০ জন নিহত হয়েছেন। রাজ্যের প্রসিকিউটরের দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে কুলিয়াকানের একটি প্রধান সড়কে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাঁচজন পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মেক্সিকোর অন্যতম সহিংস ও শক্তিশালী মাদক চক্র সিনালোয়ার দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের মধ্যে গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে এলাকা দখলের জন্য সংঘর্ষ শুরু হয়। চক্রের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইসমায়েল ‘এল মায়ো’ জামবাদার গত ২৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারের পর থেকে এই সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
জামবাদা দাবি করেছেন, তাকে মেক্সিকো থেকে অপহরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। জামবাদার সঙ্গে গ্রেফতার হন মাদক সম্রাট এল চাপের অন্যতম পুত্র জোয়াকিন গুজমান লোপেজও। এল চাপো বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আজীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
সম্প্রতি জামবাদার অনুগতদের সঙ্গে এল চাপোর পুত্রদের সমর্থকদের মধ্যেই সহিংসতা ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে স্থানীয় বেশ কিছু পুলিশ সদস্যকে নিরস্ত্র করেছে সেনাবাহিনী।
মেক্সিকোর সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর দাবি করেছেন, জামবাদাকে গ্রেফতারের ফলে এই সংঘর্ষ আরও বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতির জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে আংশিকভাবে দায়ী করেছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কেন সালাজার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। জামবাদাকে গ্রেফতার পূর্বপরিকল্পিত বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটিও অস্বীকার করেছে ওয়াশিংটন।
২০০৬ সাল থেকে মেক্সিকোয় মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত সহিংসতায় ৪ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাউম দায়িত্বগ্রহণের পর সাবেক প্রেসিডেন্টের ‘বুলেট নয়, আলিঙ্গন’ নীতি অনুসরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই নীতি মূলত সামাজিক নীতির মাধ্যমে অপরাধের শিকড় উপড়ে ফেলায় জোর দেয়।
আগামী সপ্তাহে শেইনবাউম তার নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। এসময় মেক্সিকোয় সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য নতুন দিকনির্দেশনা দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: এএফপি
কেএএ/