চলতি সপ্তাহে লেবাননে বিস্ফোরণ-হামলায় নিহত ৭০
চলতি সপ্তাহে পেজার বিস্ফোরণ, ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণ এবং ড্রোন হামলার ঘটনায় লেবাননে ৭০ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১৭৭ জন। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে ১৫২ জনই ইন্টেন্সিভ কেয়ারে রয়েছেন।
লেবাননের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় চার মাস পর্যন্ত পর্যাপ্ত ওষুধ এবং সরবরাহ রয়েছে। তবে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জন্য তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) লেবাননে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এখনও হামলা অব্যাহত রয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় কমপক্ষে তিন শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ৬৮ জন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখনও ১৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা বেশ গুরুতর।
শুক্রবারের হামলায় হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লেবানন সীমান্ত নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত সামরিক অভিযান চলবে।
- আরও পড়ুন:
- মধ্যপ্রাচ্যকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন নেতানিয়াহু: ম্যাক্রোঁ
- ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর হামলা
- ইসরায়েলে চার দফা হামলার দাবি হিজবুল্লাহর
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, বিমান হামলায় ইব্রাহিম আকিলসহ কয়েকজন সিনিয়র হিজবুল্লাহ নেতা নিহত হয়েছেন।
হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে। তবে কীভাবে হিজবুল্লাহর এই শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
এর আগে লেবাননে তারবিহীন যোগাযোগ যন্ত্র পেজার ও রেডিও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া এর আগে মঙ্গলবার হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের ব্যবহার করা পেজার বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া এই বিস্ফোরণে আহত হয়েছে ২৩০০ এরও বেশি মানুষ। এদিকে ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে।
বুধবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের যন্ত্র ওয়াকি-টকিতে বিস্ফোরণ ঘটে। দেশজুড়ে পাঁচ হাজারের বেশি ডিভাইসে বিস্ফোরণের এই ঘটনায় অন্তত ২৫ জন নিহত এবং আরও ৬০৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ইসরায়েলের এসব হামলার পর লেবাননজুড়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। দেশটির অনেক নাগরিক এখন বিস্ফোরণের আশঙ্কায় তাদের মোবাইল ফোন থেকেও দূরে থাকছেন।
রাজধানী বৈরুতের কাছের এক রাস্তায় মোস্তফা সিবাল নামের এক ব্যক্তি ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এটা আর ছোট বিষয় নয়, এটা এখন যুদ্ধ। এখন আমাদের মোবাইল ফোনও নিরাপদ নয়। গতকালের বিস্ফোরণ সম্পর্কে জানার পরর আমি আমার ফোনটি মোটরসাইকেলে রেখেই চলে এসছি। ওটা ধরতেও এখন ভয় লাগছে।
ইসরায়েল বলেছে, তাদের সামরিক বাহিনীর যুদ্ধ বিমান থেকে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে রাতভর হামলা করা হয়েছে। এদিকে, হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত আল-মানার টেলিভিশনকে লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে আবারও সীমান্ত এলাকার কাছে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
টিটিএন