মণিপুরে ভারতীয় সাবেক সেনাসদস্যকে পিটিয়ে হত্যা
মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের সংঘাতে উত্তপ্ত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। এর মধ্যেই সেখানে দেশটির সাবেক এক সেনাসদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে মণিপুরের একটি বাফার জোন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, লালবই মেইতে নামে ওই সাবেক সেনাসদস্য ভুল করে মেইতেই ও কুকিদের ওই বাফার জোনে ঢুকে পড়েছিলেন। পরে একদল উত্তেজিত জনতা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।
লালবই মেইতে মণিপুরের ক্যাংপোকপি জেলার মোতবাং এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈন্য ছিলেন তিনি। সোমবার সকালের দিকে ইম্ফল পশ্চিম জেলার সেকমাই এলাকায় তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে স্থানীয়রা তার মরদেহ শনাক্ত করে পুলিশকে খবর দেন।
আরও পড়ুন:
- সহিংসতায় উত্তপ্ত মণিপুরের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে যা জানা গেলো
- মণিপুরে সাতরঙা পতাকা ওড়ালো শিক্ষার্থীরা
- মণিপুরে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে যে দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাবেক ওই সেনাসদস্যের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় ভুক্তভোগীর পরিবার এফআইআর দায়ের করেছে।
মণিপুর পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) জানিয়েছেন, সাবেক ওই সেনাসদস্য দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত বছরের মে মাসে মণিপুরের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায় ও কুকি উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। তাতে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর রাজ্যজুড়ে থেমে থেমে সহিংসতা চললেও এই প্রথমবারের মতো চলমান জাতিগত সংঘাতে ড্রোন ও রকেটের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
- মণিপুরে আবারও ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা, নিহত ৬
- মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৪০
- মণিপুর ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ, মিজোরামে শরণার্থীর ঢল
- মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় উত্তাল ভারত
জানা গেছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা এবার রাইফেল ও গ্রেনেডেও ব্যবহার করছেন। তাছাড়া গত কয়েক দিনের সহিংসতায় দেশটির এই রাজ্যে কমপক্ষে আটজন নিহত ও ১২ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, দুর্বৃত্তদের যে কোনো হামলার চেষ্টা নস্যাৎ করে দিতে অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা স্থাপন করেছে আসাম রাইফেলস ও পুলিশ। সেই সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
এসএএইচ