ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

আর জি কর কাণ্ড

‘বিচার পেতে আলোর পথে’ কলকাতা, ফিরে এলো ‘রাত দখল’

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ১১:৫৬ এএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাতের আলো নিভিয়ে প্রতিবাদে নামলো পশ্চিমবঙ্গবাসী। তবে এই অন্ধকার ভয়ের নয়, সাহস জোগানোর! কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ন্যায়বিচার চেয়ে আবারও ‘রাত দখলে’ নামলো রাজ্যের মানুষ।

গত ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় নৃশংস অত্যাচার নেমে এসেছিল ওই চিকিৎসক তরুণীর ওপর। এরপর থেকেই ন্যায়বিচারের দাবিতে রাজ্যজুড়ে টানা আন্দোলন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চলে আসছে। এরই মধ্যে গত ১৪ আগস্ট ‘রাত দখলে’ নেমেছিলেন নারীরা। সেই কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল গোটা রাজ্যে। কিন্তু প্রতিবাদের মাত্রার নিরিখে সেই দিনটিকেও হার মানালো বুধবারের (৪ সেপ্টেম্বর) রাত।

আরও পড়ুন>>

কলকাতা থেকে বহরমপুর, বাঁকুড়া থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা- আলো নিভিয়ে মোমবাতি নিয়ে এক অভিনব প্রতিবাদ রাজ্যবাসীর। রাত ৯টা থেকে ১০টা- রাস্তা, ঘর, দোকানপাট -সব জায়গায় আলো নিভিয়ে মোমবাতি ও প্রদীপ হাতে রাস্তায় নেমে আসেন অসংখ্য মানুষ। কেউ আবার মশাল জ্বালিয়ে এগিয়ে চলেন সামনের দিকে! কেউ কেউ মানববন্ধন করে হাতে মোমবাতি নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। সবারই এক সুর, ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’।

প্রাথমিকভাবে আন্দোলনের সময়সীমা এক ঘণ্টা নির্দিষ্ট থাকলেও সেটি চলেছে রাতভর। রাত যত গড়িয়েছে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা তত বেড়েছে। গান, কবিতা আবৃত্তির পাশাপাশি মুহুর্মুহু চলে স্লোগান। কোথাও ‘দড়ি ধরে মারো টান, রানি হবে খান খান’, কোথাও আবার ‘দাবি এক দফা এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ’- এমন ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে রাজ্যের আকাশ-বাতাস।

পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা সেই নির্যাতিতার পাড়ায় আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ করেছে স্থানীয় মানুষ। কলকাতার গার্ডেন রিচে মশাল হাতে, গান গেয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে জনতা। প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে মানববন্ধন হয় বহরমপুরে। বাঁকুড়ায় মশাল হাতে রাত দখলে নামেন নারীরা। সল্টলেকের বিভিন্ন আইল্যান্ডে মোমবাতি হাতে নিয়ে, কোথাও আবার মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন সর্বস্তরের মানুষ।

আরও পড়ুন>>

সুবিচার চেয়ে বিমানবন্দর এক নম্বর গেটে মানববন্ধন করেছে নাগরিক সমাজের। এছাড়াও কৃষ্ণনগর, বর্ধমান, বারাসাত, বেহালা- সর্বত্র প্রতিবাদের ভাষা ছিল গান, পথনাটিকা। এমনকি কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে রাজভবন- আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ জানানো হলো সেখানেও। আর যারা ঘর ছেড়ে বেরোতে পারেননি তারা বাড়িতেই মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন।

নাগরিক সমাজের এই প্রতিবাদে কলকাতাসহ জেলায় জেলায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে পড়ে। ফলে কাউকে আধা ঘণ্টা, কাউকে তারও বেশি সময় গাড়িতেই অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে ধৈর্যের বিচ্যুতি ঘটতে দেখা যায়নি। অনেককেই গাড়ির আলো নিভিয়ে প্রতিবাদে যোগ দিতে দেখা যায়।

সৌমি দাশ নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, আমরা চাই, এই জঘন্যতম কাজ যে করেছে তার চরমতম শাস্তি হোক এবং আমাদের দিদি বিচার পাক।

সুলেখা মুখার্জি নামে আরেকজন জানান, যতদিন না এই নির্মম হত্যার বিচার হচ্ছে, ততদিন আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত বলে আমার মনে হয়। যত দ্রুত সম্ভব সিবিআই দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করুক, এই দাবি রাখছি।

ডিডি/কেএএ/