হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন নিয়ে দোটানায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ প্রধান ও মার্কিন বিমান বাহিনীর জেনারেল চার্লস কিউ. ব্রাউন বলেছেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে ইসরায়েলকে সেভাবে রক্ষা করতে পারবে না, যেভাবে চলতি বছরের এপ্রিলে ইরানের ড্রোন হামলার সময় করেছিল। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সমর্থন করলে ইরান হিজবুল্লাকে সমর্থন দিতে আরও বেশি ঝুঁকবে।
কিউ. ব্রাউন বলেন, ইরান ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকেও সমর্থন করে। কিন্তু লেবাননে যুদ্ধে জড়ালো তেহরান আরও দৃঢ়ভাবে হিজবুল্লাহর পিছনে দাঁড়াবে। বিশেষ করে, যদি তারা মনে করে যে হিজবুল্লাহকে উল্লেখযোগ্যভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আর লেবাননে ইসরায়েলের যে কোনো সামরিক আক্রমণ একটি বিস্তৃত যুদ্ধের সূচনা করতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিপদে ফেলতে পারে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হিজবুল্লাহ ক্রমাগত আক্রমণ বন্ধ করতে লেবাননে সংগঠনটির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করার পর ব্রাউনের এসব মন্তব্য সামনে এলো।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রোববার (২৩ জুন) রাতে চ্যানেল ১৪ কে বলেন, ইসরায়েল হিজবুল্লাহ হুমকির বিপরীতে একটি কূটনৈতিক সমাধানের জন্য উন্মুক্ত। তবে এটি অবশ্যই আমাদের শর্তে হতে হবে। আমরা যা প্রয়োজন তা করবো।
‘আমি ইসরায়েলের নাগরিকদের আশ্বস্ত করতে পারি যে যদি আমাদের যদি হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই তা করবো। আমরা বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই করতে পারি ও তার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছি।’
সংঘাত বৃদ্ধির ঝুঁকি
কিউ. ব্রাউন বলেন, এই বছরের শুরুতে ইরান যখন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহুকে যে ধরনের সহায়তা দিয়েছিল, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে, তেমন সহায়তা দিতে পারবে না। আর সীমান্ত পেরিয়ে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে যে স্বল্প পাল্লার রকেট নিক্ষেপ করে, সেগুলো প্রতিহত করা বেশ কঠিন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মূল অগ্রাধিকার ছিল মার্কিন বাহিনীর সুরক্ষা। আর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এই অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটিতে কোনো আক্রমণ করা হয়নি। তাই লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
লেবাননে যে কোন ধরনের সামরিক অভিযানের প্রভাব সম্পর্কে ইসরায়েলকে চিন্তা করার আহ্বান জানান কিউ. ব্রাউন। তাদের এই আক্রমণ যে শুধু ওই অঞ্চলকেই প্রভাবিত করবে তা নয়, ওই অঞ্চলে থাকা মার্কিন সেনাদের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ইসরায়েলকে অবশ্যই এসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
এর আগে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সর্বাত্মক যুদ্ধ বাধলে ইহুদি রাষ্ট্রটিকে সমর্থন দেবে বলে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে সফরকারী ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে এমনই আশ্বাস দিয়েছিলেন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট
এসএএইচ