ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বে প্রথমবার মৃগী রোগীর মাথায় যন্ত্র স্থাপন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:৫৪ পিএম, ২৪ জুন ২০২৪

খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বে প্রথমবারের মতো একজন গুরুতর মৃগীরোগীর মাথায় বিশেষ একটি যন্ত্র বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে খিঁচুনি বহুকাংশে নিয়ন্ত্রণে আসা সম্ভব বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসি জানায়, গত বছর ওরান নোলসন নামের ১৩ বছর বয়সী ওই কিশোরের মাথার খুলিতে পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্রটি বসানো হয়। এই যন্ত্র থেকে মস্তিস্কে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো হচ্ছে, যার ফলে দিনের বেলা তার খিঁচুনি অনেকটা কমে গেছে।

বিবিসি আরও জানায়, ডিভাইসটির নাম হলো নিউরোস্টিমুলেটর, যেটি তৈরি করেছে ‘অ্যাম্বার থেরাপিউটিকস’ নামে ব্রিটিশ একটি কোম্পানি। এটির মাধ্যমে মস্তিষ্কের গভীরে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো সম্ভব। লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালে গত বছরের অক্টোবরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওরানের মাথায় যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়েছিল।

জানা গেছে, ওরান যুক্তরাজ্যের সমারসেটের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই তার লেনক্স-গ্যাস্টট সিনড্রোম রয়েছে। এটি মৃগীরোগের একটি ভয়াবহ পর্যায়, যা শিশুদের স্নায়ুকে শৈশব থেকেই বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তিন বছর বয়সে ওরানের এই রোগ হয়। তখন থেকে ওরান দুর্বিষহ ভোগান্তির ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। দিনে অন্তত ২৪ বার থেকে শতাধিকবার তার খিঁচুনি হতো।

গত বছর অস্ত্রোপচারের আগে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছিলেন ওরানের মা জাস্টিন নোলসন। মৃগী রোগ কীভাবে তার ছেলের জীবনকে অতিষ্ঠ করে দিয়েছিল, ওরানের শৈশবকে কেড়ে নিয়েছিল, তা জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ওরানের বিভিন্ন ধরণের খিঁচুনি হতো। কখনো কখনো সে প্রচণ্ডভাবে কাঁপকে কাঁপতে মাটিতে পড়ে যেতো, জ্ঞানও হারিয়ে ফেলতো। এমনকি, মাঝেমধ্যে তার ছেলের শ্বাস বন্ধ হয়ে যেতো। তখন তাকে বাঁচাতে জরুরি ওষুধের প্রয়োজন হতো।

তবে নিউরোস্টিমুলেটর লাগানোর পর তার ছেলে আড়ের থেকে অনেক ভালো আছে, বলে জানিয়েছেন তিনি। জাস্টিনের তথ্যানুযায়ী, ওরানের খিচুনি দিনের বেলায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে।

পরীক্ষামূলক এই প্রচেষ্টায় যৌথভাবে কাজ করছে, গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতাল, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, কিংস কলেজ হাসপাতাল ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরা।

মৃগী একটি স্নায়ুবিক রোগ, যাতে আক্রান্ত হলে খিঁচুনি হয়। রোগটির প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও মস্তিষ্কে আঘাত, স্ট্রোক, মস্তিষ্কে টিউমার বা সংক্রমণ, জন্মগত ত্রুটিকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জিনগত মিউটেশনকেও (জিনের গঠন বা উপাদানের পরিবর্তন) কিছু ক্ষেত্রে এই রোগের জন্য দায়ী বলেও মনে করেন অনেকে।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ