চার জিম্মিকে উদ্ধার করতে ‘গণহত্যা’ চালালো ইসরায়েল
মধ্য গাজায় অভিযান চালিয়ে চার ইসরায়েলি জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। শনিবার (৮ জুন) এক বিবৃতিতে নুসেইরাত শহরের দুটি পৃথক স্থান থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে আইডিএফ।
এদিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার বলেছে, শনিবার ওই চার জিম্মিকে উদ্ধার করতে গিয়ে নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্পে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে অন্তত ২১০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ৪০০ জনেরও বেশি। বিষয়টিকে ‘গণহত্যা’ বলে দাবি করছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানিয়েছে, ইসরায়েলি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে নোয়া আরগামানি (২৫), আলমগ মেইর জান (২১), আন্দ্রেই কোজলভ (২৭) ও সলোমি ঝিভ (৪০) নামের চার জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। মুক্তির পরে চীনা বংশোদ্ভূত ইসরায়েলি নাগরিক নোয়া আরগামানির বাবার সঙ্গে পুনর্মিলনের ভিডিও প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের চ্যানেল-১২।
এর আগে, আরগামানিকে যখন হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা ধরে নিয়ে যান, তখন তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এতে দেখা গিয়েছিল ওই তরুণী চিৎকার করে বলছেন, দয়া করে, আমাকে হত্যা করবেন না।
উদ্ধার করা অপর জিম্মিদের মধ্যে রয়েছেন রুশ নাগরিক আন্দ্রেই কোজলভ। তিনি ২০২২ সালে ইসরায়েলে এসেছিলেন। তিনি শলোমি জিভও উৎসবের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কাজ করছিলেন। অফর জিম্মি মেইর জানও উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ও পালানোর চেষ্টাকালে হামাস তাকে আটক করে। তিনিও উৎসবের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মুক্ত করে আনা চার ব্যক্তির সবার শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো বলে জানিয়েছে আইডিএফ। এরপরও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে তেল-হাশোমার মেডিকেল সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি ওই অভিযানে শিশুসহ কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কয়েকেজন। এমন পরিস্থিতিতে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হিমিশিম খাচ্ছেন আল আওদা ও আল-আকসা হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীরা। তাছাড়া হতাহত শিশুদের ছবিও প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে একটি সংগীত উৎসবে হামলা চালিয়ে ২২১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তাদের মধ্যে ৪০ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে আইডিএফ। হামাসের হাতে এখনো জিম্মি রয়েছে ১১৬ জন।
সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি
এসএএইচ/এসআর