পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের ওপর প্রথম নিষেধাজ্ঞা দিলো কানাডা
প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী ইসরায়েলিদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিলো কানাডা। পশ্চিম তীরে সহিংসতার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এই নিষেধাজ্ঞা দেয় ট্রুডো সরকার। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়।
এক বিবৃতিতে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেছেন, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি গভীরভাবে উদ্বেগজনক। তাছাড়া ইসরায়েলিদের এমন আচরণ এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিও তৈরি করেছে। এমন পরিস্থিতি আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই যে, উগ্র বসতি স্থাপনকারীদের এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য ও এর পরিণত তাদের ভোগ করতে হবে।
আরও পড়ুন:
- পশ্চিম তীরে ৩৪০০ বসতি স্থাপনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিলো ইসরায়েল
- পশ্চিম তীরে অভিযান, আরও ১৬ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার
- মার্কিন অস্ত্র দিয়ে ইসরায়েল ‘হয়তো’ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে: যুক্তরাষ্ট্র
- ইসরায়েলকে শাসালেন বাইডেন
জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে লেনদেন বন্ধসহ কানাডায় তাদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যেসব ইসরায়েলিদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ডেভিড চাই চাসদাই নামক এক ব্যক্তি রয়েছেন, যার বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরের হুওয়ারাত শহরে দাঙ্গা উসকে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে ডেভিড চাই চাসদাই সহ জেভি বার ইয়োসেফ, মোশে শারভিত ও ইয়িনন লেভি নামক ইসরায়েলি নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাদের বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের ওপর বারবার হয়রানি, হুমকি ও হামলার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ডেভিড চাই চাসদাই ও ইয়িনন লেভির ওপরে এখনো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। সে সময় ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কোনো দখল কার্যক্রম চালানো হবে না। কিন্তু পরে আর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি ইহুদি রাষ্ট্রটি। প্রায় প্রতি বছরই একটু একটু করে ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ড নিজেদের দখলে নিয়ে নিচ্ছে ক্ষমতাবান ইসরায়েলিরা।
আরও পড়ুন:
- বাইডেন-নেতানিয়াহুর বন্ধুত্বে ফাটল?
- প্রয়োজন হলে ইসরায়েল একাই যুদ্ধ চালিয়ে যাবে: নেতানিয়াহু
- ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার আহ্বান অ্যামনেস্টির
- বাইডেনের হুঁশিয়ারি তোয়াক্কা না করে রাফায় হামলা চালালো ইসরায়েল
- ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঐতিহাসিক প্রেম’
বর্তমানে পশ্চিম তীরে ৩০ লাখ ফিলিস্তিনির বসবাস। অন্যদিকে, সেখানে জোরপূর্বক বসতি স্থাপন করেছে প্রায় ৪ লাখ ৯০ হাজার ইসরায়েলি, যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে বিবেচিত।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পর পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলিদের সহিংসতা বেড়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গত সাত মাসে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে অন্তত ৮০০টি সহিংসতা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক ফিলিস্তিনি।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইসরায়েল
এসএএইচ