গাজায় মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা বন্ধ হওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে ইসরায়েল। নতুন করে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান ও ড্রোন হামলায় নুসেইরাত শরণার্থী শিবির এবং গাজা সিটিতে তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে সোমবার সেখানে কমপক্ষে ৩৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজ এজেন্সি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিশ্বজুড়েই গাজা সংঘাত বন্ধের জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বরং রাফা এবং অন্যান্য শহরে হামলার তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি গাজায় ৪০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতির বিষয়টি মেনে নেওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। এ বিষয়ে হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আক্রমণ বন্ধ করলেই তা উদারতা হয়ে যাবে না।
ছবি: এএফপি
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, গাজা সংঘাতের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ইসরায়েলের ওপর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার এখতিয়ার নেই।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। অভিযানের নামে সেখানে ৬ মাসের বেশি সময় ধরে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৪৮৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৭৭ হাজার ৬৪৩ জন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় প্রায় প্রতিটি ভবন, স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে সাড়ে তিন কোটি টনের বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। যুদ্ধ শেষ হলে এক দুই বছরে এসব ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন এজেন্সি বলছে, এসব ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিতে এক দশকের বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
- আরও পড়ুন:
- গাজায় সাড়ে তিন কোটি টনের বেশি ধ্বংসস্তূপ সরাতে কত সময় লাগবে?
- রাফায় ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ৯ সদস্য নিহত
- ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেফতার শতাধিক
- যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামবিদ্বেষী ঘটনা বেড়ে ৩০ বছরে সর্বোচ্চ
গাজায় এখনো যুদ্ধবিরতি নিয়ে সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। হামাস বা ইসরায়েলি বাহিনী এ বিষয়ে একমত হতে না পারায় যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। যুদ্ধ শেষ হলে এসব ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিকের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করাটাই হয়ে উঠবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ ইতোমধ্যেই সেখানে ৩ কোটি ৭০ লাখ টন ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে।
হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পরিচালক ফেদেরিকো দেসির মতে, ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ১০ হাজারের মতো অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ রয়েছে।
টিটিএন