২০২৩ সালে বায়ুদূষণে শীর্ষে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় পাকিস্তান
বায়ুমানের দিক থেকে ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ৫ দেশের মধ্যে সবার শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। তালিকায় এর পরপরই রয়েছে প্রতিবেশি দেশ ভারত ও পাকিস্তান। বাকি দুটি দেশ হলো- তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসো। এর আগে ২০২২ সালে দূষিত বায়ুমানের তালিকায় বাংলাদেশ পঞ্চম ও ভারত অষ্টম অবস্থানে ছিল।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সুইডেনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা আইকিউএয়ারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের ১৩৪টি দেশ ও অঞ্চলের ৩০ হাজারের বেশি পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইকিউএয়ার।
আরও পড়ুন:
- বায়ুদূষণে শীর্ষে আজ লাহোর, ঢাকা তৃতীয়
- থাইল্যান্ডের ১ কোটিরও বেশি মানুষ বায়ুদূষণজনিত রোগে আক্রান্ত
- দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ কেন এত বেশি?
বাতাসের মান নির্ভর করে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণের (পিএম ২.৫) ওপর, যা পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পার্টস পার মিলিয়ন-পিপিএম) এককে।
২০২১ সালে ডব্লিউএইচও তার বায়ুমান নির্দেশক গাইডলাইন পরিবর্তনের পর জানায়, পিএম-২.৫ নামে পরিচিত ছোট ও বিপজ্জনক বায়ুকণার গড় বার্ষিক ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়। এমনকি, এর চেয়ে কম ঘনত্বও উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। অথচ ২০২৩ সালে এই পাঁচটি দেশের বাতাসে পিএম- ২.৫ এর ঘনত্ব ডব্লিউএইচও’র সুপারিশের চেয়েও ৯ থেকে ১৫ গুণ পর্যন্ত বেশি ছিল।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশের বাতাসে পিএম ২.৫ এর পরিমাণ ছিল ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত পরিমাণের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি। পাকিস্তানে এর পরিমাণ ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম, যা ১৪ গুণ এবং ভারতে ৫৪ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম, যা ১০ গুণ বেশি। অন্যদিকে তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসোর বাতাসে এর পরিমাণ ৯ গুণ বেশি ছিল।
আরও পড়ুন:
- বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি, স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত
- বায়ুদূষণ কমাতে কৃত্রিম বৃষ্টির চিন্তা পাকিস্তানের
- বায়ুদূষণে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু কমছে প্রায় ৭ বছর
আইকিউএয়ারের বায়ুর গুণগত মানবিষয়ক বিজ্ঞানের ব্যবস্থাপক ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোডার বলেছেন, জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় পিএম ২ দশমিক ৫ অনেক বেড়েছে। কারণ হলো এই অঞ্চল থেকে বায়ুর এই উপাদানের অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ নেই। এসব কারণের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে কৃষি ব্যবস্থা, শিল্প ও জনসংখ্যার ঘনত্বের মতো বিষয়। দুর্ভাগ্যবশত, এই পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার চেয়ে আরও অবনতি হবে বলে মনে হচ্ছে।
সূত্র: আইকিউএয়ার
এসএএইচ