রমজানের আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতির আশা
পবিত্র রমজান মাসের আগেই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। এরই মধ্যে কাতার, মিশর, যুক্তরাষ্ট্র ও হামাসের প্রতিনিধিরা নতুন যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য মিশরের রাজধানী কায়রোতে পৌঁছেছেন।
হামাস বলেছে, ইসরায়েল যদি তাদের শর্তগুলো মেনে নেয়, তাহলে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব। কিন্তু ইসরায়েলি গণমাধ্যম বলছে, বাকি জিম্মিদের সঠিক তথ্য না দেওয়ায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় বসবে না নেতানিয়াহুর প্রতিনিধিরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল চুক্তিটি ‘কম-বেশি’ মেনে নিয়েছে।
আরও পড়ুন:
- যুদ্ধবিরতি আটকে দিয়ে আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলছে যুক্তরাষ্ট্র
- ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঐতিহাসিক প্রেম’
- যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে সুর পাল্টালেন বাইডেন
- যুদ্ধপরবর্তী গাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায় ইসরায়েল
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) গাজায় একটি ত্রাণবাহী গাড়ির চারপাশে ভিড় করা ফিলিস্তিনেদের উপর গুলি ছোড়ে ইসরায়েল। তাতে ১১৫ জন নিহত হয়। মূলত এই ঘটনার পরেই যুদ্ধবিরতির বিষয়টি আবারও জোরালোভাবে আলোচনায় উঠে আসে। তবে ত্রাণ সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকা গাজাবাসীর উপর হামলার কথা অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের হামলায় আতঙ্কিত এক শিশুকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এক যুবক/ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে তোলা ছবি/ এএফপি
মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশরের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কাতারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। হামাস ও ইসরায়েল উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল তাদের পক্ষ থেকে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে যেতে ‘প্রাথমিকভাবে’ রাজি হয়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো ছয় সপ্তাহের নতুন যুদ্ধবিরতির একটি কাঠামো তৈরি করে। এই সময়ের মধ্যে হামাস ৪০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। অন্যদিকে, ইসরায়েল তাদের কারাগার থেকে কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে।
আরও পড়ুন:
- যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোয় বাতিল হলো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব
- গাজায় ক্ষুধার যন্ত্রণায় মারা গেলো ২ মাসের শিশু
- খাবারের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি, নিহত বেড়ে ১১৫
এদিকে, গাজার প্রথমবারের মতো বিমান থেকে মানবিক সহায়তা ফেলেছে ইসরায়েলের সবেচেয়ে কট্টোর মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তিনটি সামরিক বিমানে প্যারাস্যুটের মাধ্যমে ৩০ হাজারেরও বেশি প্যাকেট খাবার ফেলা হয়। জর্ডানের বিমান বাহিনীর সঙ্গে মিলে যৌথভাবে এই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন, এমন সহায়তা গাজায় আরও পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে হামলা চালান হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা। ওইদিন রাত থেকেই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনো চলমান। ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৮০ হাজার ও বাস্তুচ্যুত হয়েছে উপত্যকার প্রায় সব মানুষ।
সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা
এসএএইচ