ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

পশ্চিমবঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি | কলকাতা | প্রকাশিত: ০৪:৪১ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

যথাযথ মর্যাদায় কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস। এ উপলক্ষে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ কর্মসূচি নেওয়া হয়। এদিন সকালে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ করা হয়। এরপর কলকাতার ৩, সোহরাওয়ার্দী এভিনিউতে অবস্থিত বাংলাদেশ গ্রন্থাগার ও তথ্য কেন্দ্রের সামনে থেকে প্রভাতফেরি বের করা হয়।

হাতে নানা বর্ণের পোস্টার, ফুলের মালাসহ এই প্রভাতফেরিতে উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ছাড়াও অসংখ্য মানুষ অংশ নেন। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এই ধ্বনি বাজিয়ে প্রভাতফেরি কলকাতার পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট ক্রসিং, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু সড়ক হয়ে আবারও উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ফিরে আসে।

এরপরে মিশন প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক দিয়ে সালাম-বরকত-জব্বারদসহ সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, প্রথম সচিব (প্রেস) রঞ্জন সেন, প্রথম সচিব (বাণিজ্য) শামসুল আরীফ, প্রথম সচিব (ভিসা) আলমাস হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে মিশন প্রাঙ্গণের ‘মুজিব মঞ্চে’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুলের মালা পরিয়ে শ্রদ্ধা জানান দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রভাতফেরি২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রভাতফেরি

উপ-হাইকমিশনর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আলাদাভাবে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানায় ইন্দো বাংলা প্রেসক্লাব, কলকাতা প্রেসক্লাব, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি, বাংলাদেশ বিমান ও সোনালী ব্যাংক। পরে মিশন প্রাঙ্গণে এ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এছাড়া বিকেলে মিশন প্রাঙ্গণে একটি সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন কলকাতায় অবস্থিত দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

এদিকে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন ‘বাংলা আমার তৃষ্ণার জল’। এদিন বিকেলে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে এ দিবস উদযাপন করবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। সেখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী, রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও বিধায়কসহ গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সারারাত ধরে অনুষ্ঠান করেছে ‘ভাষা ও চেতনা সমিতি’ নামে একটি সংগঠন। মঙ্গলবার বিকেল থেকেই কলকাতার রবীন্দ্রসদন লাগোয়া একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে রাণুছায়া মঞ্চে অনুষ্ঠিত বাংলা ভাষা উৎসবে নাটক, বাউল সঙ্গীত ও লোক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহারের পাশাপাশি বাংলাদেশের শিল্পীরাও অংশ নেন। বুধবার সকালে প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে সেই অনুষ্ঠান শেষ হয়।

এদিকে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের অন্যতম স্থলবন্দর পেট্রাপোল-বেনাপোলের জিরো পয়েন্ট। সেখানেও বনগাঁ পৌরসভার উদ্যোগে পেট্রাপোল বন্দর সংলগ্ন এলাকায় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে ভাষাশহীদদের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন দুই দেশের প্রতিনিধি ও ভাষাপ্রেমীরা।

শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভারত-বাংলাদেশসহ অন্য দেশের অন্য ভাষাভাষী শিক্ষার্থীরাও সমবেত কণ্ঠে বাংলা গান গেয়ে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরিতে অংশ নেন।

বিশেষ এই দিনটিকে মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গের সব জেলা ও মহকুমায়ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে ‘অমর একুশে’ পালন করা হচ্ছে। এছাড়া রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাব, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও বিশেষ মর্যাদায় এই দিনটি পালন করছে।

ডিডি/এসএএইচ