মিয়ানমার
রাখাইনের সেনা সদরদপ্তর দখল করলো আরাকান আর্মি
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির (এএ) তীব্র লড়াই চলছে। এরই মধ্যে রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাখাইনের মিনবিয়া শহরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৩৮০ ব্যাটালিয়নের সদরদপ্তর দখলে নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি।
মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাখাইনের ম্রাউক ইউ, কিয়াকতাও ও রাথেডং এলাকায় জান্তা বাহিনীর সঙ্গে এখনো আরাকান আর্মির লড়াই ব্যাপক লড়াই চলছে।
এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, জান্তা সৈন্যরা এখন আমাদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই করতে পারছে না। তারা এখন আরও বেশি গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালাচ্ছে। ম্রাউক ইউ শহরে সেনাবাহিনীর ৩৭৭ ও ৫৪০ ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের ৩১ ব্যাটালিয়ন থেকে গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) জান্তা বাহিনীর গোলাবর্ষণে এই শহরের চার বাসিন্দা নিহত ও অন্ত ২০ জন আহত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, জান্তা সৈন্যরা রামরি শহরে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। তবে শহরটিতে আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্মুখ লড়াইয়ের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
শনিবার বুথিডং শহরেও উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে জান্তা সৈন্যরা আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে আরাকান আর্মি। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ২৩২ এবং ৩৪৪ ব্যাটালিয়ন সিত্তে ও মিনবিয়া শহরে গোলাবর্ষণ করেছে।
সেখানকার বাসিন্দারা বলেছেন, মিনবিয়া শহরের খোয়া সোন গ্রামে সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত তিন বাসিন্দা গুরুতর আহত হয়েছেন। এর আগে, আরাকান আর্মির যোদ্ধারা ২৪ জানুয়ারি পাকতাও শহরের দখল নেন। এরপর থেকেই সেনাবাহিনী এই শহরে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ শুরু করে।
আরাকান আর্মি বলেছে, শনিবার রাতেও পাকতাও শহরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওয়াই-১২ সামরিক পরিবহন বিমান থেকে বোমা হামলা চালানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মি মিয়ানমারের শাসনে থাকতে চায় না। তারা রাখাইন রাজ্যকে স্বীকার করে না। বিদ্রোহী গোষ্ঠী এই রাজ্যকে আরাকান বলে মনে করে। তাদের মতে, আরাকান একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল। কিন্তু বার্মার রাজা আরাকান দখল করে রাজ্যটিকে দেশটির অন্তর্ভুক্ত করে।
আরাকানের স্বাধীন সত্ত্বা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সশস্ত্র সংগ্রাম করে যাচ্ছে আরাকান আর্মি। সম্প্রতি তারা দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পালতোয়া, যেটি মিয়ানমারের চিন রাজ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে পালতোয়ার দূরত্ব মাত্র ১৮ কিলোমিটারের কাছাকাছি।
তাছাড়া গত বছরের নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতওয়া ও উত্তর রাখাইনে জান্তা বাহিনীর ১৬০টিরও বেশি ঘাঁটির দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি।
সূত্র: দ্য ইরাবতী
এসএএইচ