চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের একত্রীকরণ অনিবার্য: জিনপিং
আবারও চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের একত্রীকরণ অনিবার্য বলে মন্তব্য করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আগামী মাসে চীনের স্বায়ত্তশাসিত এ অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগ দিয়ে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) এমন মন্তব্য করলেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার আধুনিক চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সে-তুংয়ের ১৩০তম জন্মদিন উপলক্ষে ভাষণ দেন শি জিনপিং। সে সময় তিনি বলেন, মাতৃভূমির সঙ্গে তাইওয়ানকে পুনরায় এক করার প্রক্রিয়া শেষ করাটা চীনের সার্বিক উন্নয়নের অনিবার্য শর্ত। এটি ন্যায়নিষ্ঠ প্রক্রিয়া, যা জনগণ চায়। চীন ও তাইওয়ান অবশ্যই আবার এক হবে।
আরও পড়ুন: তাইওয়ানের আকাশে ফের ‘চীনা বেলুন’
চীনা প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমাদের অবশ্যই আন্তপ্রণালি সম্পর্ককে শান্তিপূর্ণ করার জন্য কাজ করতে হবে। যে কোনোভাবেই হোক, চীন থেকে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে চাওয়া যে কাউকে প্রতিরোধ করতে হবে।
তাইওয়ানের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েনকে যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা বলে মনে করা হয়। তার উত্তরসূরি হিসেবে ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি থেকে এবার ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই চিং তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন লাই চিং।
নির্বাচনী লড়াইয়ে অপর দুই প্রার্থী হলেন কুয়োমিনতাং পার্টির হো ইয়ু ইহ ও তাইওয়ান পিপলস পার্টির কো ওয়েন জে। তাদের দুজনকেই বেইজিংঘনিষ্ঠ বলে বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: তাইওয়ানের আকাশে আবারও চীনের যুদ্ধবিমান
চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে থাকে। যদিও এ অঞ্চলে কখনো তাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কিন্তু চীনা কর্মকর্তারা বারবারই শান্তিপূর্ণভাবে তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছেন। এমনকি, প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করতেও চান তারা।
এদিকে, চীনা প্রেসিডেন্টের মঙ্গলবারের সতর্কবাণী শুধু যে তাইওয়ানবাসীর জন্য তা নয়। অনেকের মতে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকেই তাইওয়ানকে চীন থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা থেকে বিরতার থাকার জন্য সতর্ক করেছেন।
আরও পড়ুন: জিনপিংকে তাইওয়ানের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান বাইডেনের
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে সাক্ষাতের সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে শি জিনপিং বলেছিলেন, চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের পুনরায় একত্রীকরণকে থামানো যাবে না। সুতরাং এ ধরনের কোনো চেষ্টা করে লাভ হবে না।
২০২২ সালের আগস্টে তৎকালীন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করেন। এরপরই মূলত তাইওয়ান ঘিরে কয়েক দিন ধরে সামরিক মহড়া চালাতে থাকে চীন।
ওই মহড়ার কারণে তাইওয়ান প্রণালিতে জাহাজ চলাচল যেমন বন্ধ ছিল, তেমনি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসগুলোও তাইওয়ানে তাদের ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়। এভাবে রীতিমতো তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল চীন।
আরও পড়ুন: তাইওয়ানকে ‘অবরুদ্ধ’ করার মহড়া চালাচ্ছে চীন
যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি না হলেও, অনানুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। আবার তারা এক চীন নীতিরও সমর্থক বলে দাবি করে। অথচ এ নীতি অনুযায়ী, তাইওয়ান চীনের অংশ। তবে ওয়াশিংটন কখনোই তাইওয়ানকে বেইজিংয়ের অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।
সূত্র: সিএনএন
এসএএইচ