তুরস্কের সবুজ সংকেত, ছাড়পত্র পেলেই ন্যাটোতে যোগ দেবে সুইডেন
অবশেষে সুইডেনকে সামরিক জোট ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে তুরস্কের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিশন। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে সুইডেনকে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। এখন তুরস্কের পার্লামেন্ট চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিলেই ন্যাটোয় যোগ দিতে পারবে সুইডেন।
এদিকে, তুরস্কের সবুজ সংকেত মিললেও ন্যাটোর আরেক সদস্য হাঙ্গেরির সিদ্ধান্তের বিষয়ে এখনো কিছুই জানা যায়নি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে হাঙ্গেরির গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি ও আইনের শাসন নিয়ে সমালোচনা করে সুইডেন। তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে শীতল দ্বন্দ্ব চলছে।
আরও পড়ুন: ফিনল্যান্ডকে ছাড় দিলেও সুইডেনকে আটকাবে তুরস্ক: এরদোয়ান
সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপড়েন চলছে। ন্যাটোর অন্যান্য সদস্য দেশ সুইডেনকে ছাড়পত্র দিলেও তুরস্ক দিতে রাজি হচ্ছিল না। তুরস্কের অভিযোগ ছিল, সুইডেন কুর্দি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয় ও সমর্থন করে।
তুরস্কের অভিযোগ ছিল, ন্যাটো কুর্দি গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী বললেও, সুইডেন তাদের সন্ত্রাসী মনে করে না। তাছাড়া চলতি বছর সুইডেনে একাধিকবার পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে সুইডেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ভেটো দিয়ে আসছিল তুরস্ক।
আরও পড়ুন: সুইডেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে সমর্থন করবে না তুরস্ক: এরদোয়ান
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকেই ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। শুরুতে দুই দেশকে নিয়ে আপত্তি জানালেও, ফিনল্যান্ডকে ছাড় দেয় তুরস্ক। তারই ধারিবাহিকতায় চলতি বছরের ৪ এপ্রিল ৩১তম সদস্য হিসেবে ন্যাটোতে যোগ দেয় দেশটি।
তবে কোরআন অবমাননার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় সুইডেনকে ছাড় দিতে আপত্তি জানায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তবে বিষয়টি নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে লাগাতার আলোচনা চালিয়ে যায় ন্যাটো। শেষমেষ সেই সম্মতি মিললো সুইডেনের।
আরও পড়ুন: ন্যাটোয় ফিনল্যান্ড, মেনে নিলো তুরস্ক
এদিকে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে দেখছে না রাশিয়া। এ বিষয়ে রাশিয়ার বক্তব্য, দেশ দুটি যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেওয়ার ফলে নরডিক অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।
রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের ১ হাজার ৩৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা ন্যাটোভুক্ত কোনো দেশের সঙ্গে এটিই রাশিয়ার দীর্ঘতম সীমান্ত। তাই ন্যাটোর এই সম্প্রসারণকে নিজেদের নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে রাশিয়া।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
এসএএইচ