ব্যবসায় ২০ বার ব্যর্থ হয়েও ৯৯০ কোটি ডলারের মালিক তিনি
আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত উদ্যোক্তাদের মধ্যে সামনের সারিতে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ও কানাডিয়ান নাগরিক অপূর্ব মেহেতা। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে তার মতো সাফল্য কম উদ্যোক্তাই পেয়েছেন।
যেভাবে যাত্রা শুরু করলেন অপূর্ব
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ঘরে ঘরে মুদি বাজার পৌঁছে দেয় ইনস্টাকার্ট। সেই জনপ্রিয় সংস্থার নেপথ্যে রয়েছেন অপূর্ব। তবে এই জায়গায় পৌঁছনোর পথটা মোটেই সহজ ছিল না।
অ্যামাজনের চাকরি ছেড়ে ঝুঁকি নিয়েছিলেন অপূর্ব, সেই ফলও পেয়েছেন। আজ তিনি সফল উদ্যোক্তা। তার প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোয়।
আরও পড়ুন: বোনাস না দিয়ে চুক্তিভঙ্গ করেছে এক্স, আদালতের রুল
অপূর্ব মেহেতার জন্ম জোধপুরে, ১৯৮৬ সালে। বাবা কাজ করতেন লিবিয়ায় একটি সংস্থায়। জন্মের কয়েক মাস পর মায়ের সঙ্গে সেখানে চলে যান অপূর্ব। ২০০০ সালে তার পরিবার কানাডার অন্টারিয়োর হ্যামিল্টনে চলে আসে। তখন তার বয়স ১৪ বছর।
ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় থেকেইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক পাশ করেন অপূর্ব। ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন ব্ল্যাকবেরিতে। সেখানে চার মাস চাকরি করার পর যুক্ত হন কোয়ালকমে। ২০০৮ সালে যোগ দেন অ্যামাজনে। সেখানে সাপ্লাই চেন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন তিনি।
২০১০ সালে অ্যামাজনের চাকরি ছেড়ে দেন অপূর্ব। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চাকরি করতে তার ভালো লাগছিল না। অ্যামাজনের চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোয়।
আরও পড়ুন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-বৈদ্যুতিক বাহনে থাকছে চমক
২০১০ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত প্রায় ২০টি নতুন ব্যবসা করার চেষ্টা করেন অপূর্ব। সব কয়টিই ব্যর্থ হয়। তবুও হাল ছাড়েননি তিনি।
সেসব দিনে প্রায়ই নিজের খালি ফ্রিজের দিকে তাকাতেন অপূর্ব। আর মনে করতেন, যদি কেউ মুদিবাজার, সবজি ঘরেই পৌঁছে দিতো! তাহলে রোজ রোজ বাইরে বের হওয়া লাগতো না। সেই ভাবনা থেকেই শুরু।
দূরাবস্থার মধ্যেই একদিন তিনি খেয়াল করেন, মানুষ মুদি বাজার করতে অনেক সময় অপচয় করে। মাঝেমধ্যে মুদি বাজার করতে গিয়ে বয়স্কদের অনেক ঝক্কিও পোহাতে হয়। এমন ভাবনা থেকেই নতুন কিছু করার চিন্তা করেন অপূর্ব।
আরও পড়ুন: বাতিল প্লেন দিয়ে চমৎকার ঘরবাড়ি, তাক লাগালেন আইরিশ উদ্যোক্তা
তিনি ভাবেন, এই বাজার যদি গ্রাহকদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া যায়, তাহলে তো ভালোই সাড়া মিলবে। এমন উদ্যোগের বাজারও হতে পারে অনেক বড়।
২০১২ সালে অপূর্ব শুরু করেন ‘ইনস্টাকার্ট’। তখন তার বয়স ২৬ বছর। কয়েক মাসেই সাফল্যের মুখ দেখেন তিনি। ১১ বছর পর এখন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ হাজার শহরে কার্যক্রম চালাচ্ছে এই সংস্থা।
আরও পড়ুন: ফর্মুলা দুধ বিক্রি করে এশিয়ার শীর্ষ নারী উদ্যোক্তার তালিকায়
গত সেপ্টেম্বরে নিজ সংস্থার প্রথম শেয়ার বাজারে ছাড়ে ইনস্টাকার্ট। মোট ৩০ শতাংশ শেয়ার ছেড়েছিল তারা। সেই শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছিল ৪০ শতাংশ। দিনশেষে ইনস্টাকার্টের শেয়ারপ্রতি দাম দাঁড়ায় ৩৩ দশমিক ৩৭ ডলারে,বাংলাদেশি মুদ্রায় যা সাড়ে ৩ হাজার টাকারও বেশি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি বলছে, এখন ইনস্টাকার্টের মোট মূল্য ৯৯০ কোটি ডলার।
সূত্র: ডিএনএ ইন্ডিয়া
এসএএইচ