গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক সাংবাদিক নিহত
গাজা ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় বার্তা সংস্থা আল রাই এজেন্সির উপ-পরিচালক আহমাদ জামাল আল মাধুন নিহত হয়েছেন। গাজা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তার মৃত্যুতে গাজায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০১ জনে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারপরই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত চলছেই। গাজার বিভিন্ন স্থানে হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে দিন-রাত হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। এতে প্রায় প্রতিদিনই নিরীহ ফিলিস্তিনিরা প্রাণ হারাচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না নারী বা শিশুরাও।
আরও পড়ুন: ‘শুধু সহায়তা দিলেই গাজায় সমস্যার সমাধান হবে না’
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ১০১ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অর্ধ-শতাধিক মিডিয়া অফিস পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস হয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তাদের অ্যারাবিক ক্যামেরাম্যান সামের আবুদাকাও হামলায় নিহত হয়েছেন।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টের সহ-সাধারণ সম্পাদক টিম ডসন বলেন, গাজায় অস্বাভাবিক সংখ্যক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আর কোনো সংঘাতে এত সংখ্যক সাংবাদিকদের মৃত্যু দেখিনি।
দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। কিন্তু তারপরও সেখানে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সতর্ক করে জানিয়েছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন হয়ে পড়ছে। কারণ তীব্র লড়াইয়ের কারণে মানবিক সহায়তাসহ কোনো কিছুই সেখানে পাঠানো যাচ্ছে না।
অপরদিকে গাজায় শুধু সহায়তা দিলেই সেখানকার সব সমস্যার সমাধান হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অক্সফাম আমেরিকার প্রধান স্কট পল। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, যখন সেখানকার বাড়ি-ঘর, কল-কারখানা, খামার, মিল এবং বেকারিতে ক্রমাগত বোমা হামলা চালিয়ে সবকিছু ধ্বংস করা হচ্ছে তখন সহায়তা আসলেই কোনো কাজে আসবে না।
দারিদ্র্য ও অবিচারের অবসান ঘটাতে বিশ্বব্যাপী বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে অক্সফাম নামের এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটি। পল বলেন, গাজায় আটা বা ময়দা সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু আপনি যদি সেগুলো দিয়ে খাবার তৈরি করতে না পারেন বা খাবার তৈরির পরিস্থিতি যদি না থাকে তবে সেখানে এগুলি কোনো কাজে আসবে না। তাই এখন যে বিষয়গুলোর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে তা পুরোপুরি ভুল বলা যায়।
আরও পড়ুন: গাজায় অব্যাহত বোমা হামলা, দুর্ভিক্ষের সতর্কতা
তিনি বলেন, গাজায় আসলে কী প্রয়োজন তা নিয়ে বাইডেন প্রশাসন এবং বাকি বিশ্বের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে। বেশিরভাগ দেশ তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করছে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে।
টিটিএন