৭০ বছরের ভয়াবহতম খরা
পানামা খালে আরও কমবে জাহাজ চলাচল, পরিবহন ব্যয় বাড়ার শঙ্কা
সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখে পড়েছে পানামা খাল। এর ফলে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই শিপিং লেন দিয়ে চলাচলকারী জাহাজের সংখ্যা আরও কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।
পানামা খাল কর্তৃপক্ষ (এসিপি) জানিয়েছে, ১৯৫০ সালে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে শুষ্ক অক্টোবর মাস পার করেছে তারা। এ কারণে বাধ্য হয়েই জাহাজ চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
আরও পড়ুন>> পানামায় নাব্য সংকট, আটকা পড়েছে ২ শতাধিক জাহাজ
ভয়াবহ এই খরার পেছনে এল নিনো আবহাওয়া পরিস্থিতির বড় ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছে এসিপি।
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত শিপিং লেনগুলোর মধ্যে অন্যতম পানামা খাল। প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে সংযোগকারী এই পথ দিনরাত ২৪ ঘণ্টা, বছরের ৩৬৫ দিনই খোলা থাকে।
স্বাভাবিক অবস্থায় এই খাল দিয়ে প্রতি বছর ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার জাহাজ চলাচল করে। তবে খরার কারণে এ বছর আগেই জাহাজ চলাচল কমিয়ে দিয়েছিল পানামা খাল কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সেই সংখ্যা আরও কমাতে চলেছে তারা।
আরও পড়ুন>> পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ দিনের নতুন রেকর্ড
এসিপি জানিয়েছে, পানামা খালে পানির প্রধান উৎস গাতুন হ্রদ। তবে এ বছর অভূতপূর্ব হারে হ্রদটির পানি কমছে।
এসব কারণে কয়েক মাস আগে জাহাজ পারাপারের দৈনিক বুকিং স্লট ৩১টিতে নামিয়ে আনে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ। আগামী ৩ নভেম্বর থেকে সেই সংখ্যা ২৫টি করা হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে আরও কমে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক ১৮টিতে দাঁড়াতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ এই লেন দিয়ে জাহাজ চলাচল আরও কমলে তা গোটা বিশ্বের পরিবহন খাতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। আর তার ফলে বেড়ে যেতে পারে নৌপথে মালামাল পরিবহনের খরচ।
আও পড়ুন>> চীনের পর জাপানেও উষ্ণতার রেকর্ড, চোখ রাঙাচ্ছে এল নিনো
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠা পানি সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের শুরুর দিকে তারা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো খাল দিয়ে চলাচলকারী জাহাজের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
বিদ্যমান সেসব পদক্ষেপের কারণে এরই মধ্যে জাহাজ পারাপারে অভাবনীয় বিলম্ব হচ্ছে। খালের দু’ধারে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে মালবাহী বহু জাহাজকে।
যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের এক নোটে বলা হয়েছে, পানামা খালে এই বিলম্বের কারণে বিশ্বব্যাপী নৌযানের প্রাপ্যতা কঠিন হয়ে উঠেছে এবং তার ফলে পরিবহনের খরচও বাড়ছে।
কেএএ/