বিশ্বে বছরে যত শিশু মারা গেছে তার চেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে গাজা
প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতে হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় যে পরিস্থিতি চলছে তা বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের যে কোনো পরিস্থিতির চেয়ে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালের পর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতের কারণে বছরে যত শিশুর মৃত্যু হয়েছে গত তিন সপ্তাহে গাজায় তার চেয়ে বেশি শিশু নিহত হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের সর্বশেষ এক রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর আল জাজিরার।
আরও পড়ুন: রুশ বিমানবন্দরে ইসরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রোববার (৩০ অক্টোবর) শিশু বিষয়ক এই এনজিও একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে জানানো হয়, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রায় ৩ হাজার ৩২৪ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পশ্চিমতীরে মারা গেছে আরও ৩৬ শিশু।
জাতিসংঘ মহাসচিবের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে ২৪টি দেশে মোট ২ হাজার ৯৮৫ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫১৫ এবং ২০২০ সালে ২২টি দেশে ২ হাজার ৬৭৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
একটি শিশুর মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু সেখানে প্রতিনিয়ত শত শত শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। গাজায় সংঘাতের মাশুল দিতে হচ্ছে তাদের। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নিযুক্ত সেভ দ্য চিলড্রেনের আঞ্চলিক পরিচালক জেসন বলেছেন, একমাত্র যুদ্ধবিরতিই এসব শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই রাজনীতির আগে মানুষের জীবনকে মূল্যায়ণ করতে হবে। প্রতিদিন তর্ক-বির্তক করতে থাকলে এ থেকে কোনো সমাধান আসবে না। বরং আরও বেশি শিশু মারা যাবে বা আহত হবে। শিশুদের সব সময়ই সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে তারা যখন স্কুল এবং হাসপাতালে আশ্রয় নেবে তখন হামলা থেকে বিরত থাকা উচিত।
এদিকে গাজায় এখনও প্রায় এক হাজার শিশু নিখোঁজ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব শিশু হয়তো ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়েছে। গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ৮ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় এক নারীর সন্তান প্রসবের অভিজ্ঞতা
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপর থেকেই গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১৪০০ জন নিহত এবং ২২৯ জনকে জিম্মি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
টিটিএন