সৌদি যুবরাজকে মোদী
বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য সৌদি-ভারত সুসম্পর্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ
বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও কল্যাণের জন্য ভারত-সৌদি আরবের সুসম্পর্ক অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলো ১১টার দিকে হায়দরাবাদ হাউজে সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকের সময় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মোদী বলেন, যুবরাজ সালমানের নেতৃত্বে ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরব আর্থিক উন্নতির শীর্ষে পৌঁছাতে চলেছে। আর ভারত সব সময়ই সৌদি আরবকে নিজেদের অন্যতম বাণিজ্যিক ও কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে। বিশ্বের ও এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায় দুই দেশের সুসম্পর্ক ও সুষ্ঠু অংশীদারত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে। আমরা বেশ কয়েকটা ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছি, যেখানে দু-দেশের সহযোগিতাকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
সৌদি যুবরাজ বলেন, দুই দেশ আর্থিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করবে। আর ভারত যে সাফল্যের সঙ্গে জি-২০ সম্মেলনের আয়োজন করেছে, তার জন্য আমি তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গত শনিবার ভারতে আসেন সৌদি যুবরাজ। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সম্মেলন শেষ হওয়ার পর তিনি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ভারত সফর শুরু করেন। সোমবার সকালে তাকে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এদিন রাতেই ভারত ছাড়বেন সৌদি যুবরাজ।
জানা যায়, এ বৈঠকে ২০১৯ সালে দুই দেশের মধ্যে যে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ কাউন্সিল গঠিত হয়েছিল, তার অগ্রগতি পর্যালোচিত হয়। ওই কাউন্সিলের অধীনে দুটি মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটি আছে। একটি রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকেন্দ্রিক। অন্যটি অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ-সংক্রান্ত। ওই দুই কমিটির অগ্রগতির পাশাপাশি দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে, জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে ভারত নীতিগতভাবে এক আন্তর্দেশীয় রেল ও সমুদ্র যোগাযোগ স্থাপনে সম্মত হয়েছে। ভারত, পশ্চিম এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ওই প্রকল্পকে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ ইকোনমিক করিডর (আইমেক) বলা হচ্ছে।
আইমেক করিডরের অর্থায়ন কোন দেশ কতটুক করবে, তা এখনো নির্দিষ্ট না হয়নি। তবে জানা গেছে, জর্ডানের মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের হাইফা বন্দর পর্যন্ত ৮৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলরোড নির্মাণের অর্থ অনেকটাই সৌদি আরব দেবে। ভারতের কাছে সৌদি যুবরাজের গুরুত্ব এই মুহূর্তে আকাশচুম্বী।
আইমেক প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, এশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্য বাড়ানো। এর মাধ্যমে সার্বিকভাবে এসব দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে ও পারস্পরিক সম্পর্ক আর দৃঢ় হবে। এ সংযুক্তিকরণ উদ্যোগে ভারত, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) শামিল হয়েছে। অনেকে প্রস্তাবিত এ প্রকল্পকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরআই প্রকল্পের বিকল্প মনে করছেন।
২০১৪ সাল থেকেই নরেন্দ্র মোদী সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত পশ্চিম এশিয়া অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যে পাকিস্তানের প্রভাব কমিয়ে আনেতে চান। পশ্চিম এশিয়ার ওপর ভারত শুধু তেলের জন্যই নয়, রেমিট্যান্সের জন্যও নির্ভরশীল।
সূত্র: এনডিটিভি, গালফ নিউজ
এসএএইচ
সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক
- ১ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বৃষ্টির বাগড়া, কমতে পারে ভোটার উপস্থিতি
- ২ হাসিনার আমলে গুম ২০০ লোকের খোঁজ মেলেনি: তদন্ত কমিশন
- ৩ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলে বাংলাদেশে কী প্রভাব পড়বে?
- ৪ যেসব অঙ্গরাজ্যে নির্ধারিত হবে ট্রাম্প-হ্যারিসের ভাগ্য
- ৫ যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতার শঙ্কায় বিভিন্ন রাজ্যে কড়া নিরাপত্তা