ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

দ্যা ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

আমদানিতে ভারতের ‘সুরক্ষাবাদ’ মনোভাব, মূল্য দিতে হবে জনগণকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:৪৯ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০২৩

ভারতের অর্থনীতি ক্রমেই বাড়ছে। পশ্চিমা কোম্পানিগুলো দেশটিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে। কারণ চীন থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বলছে, তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠ অংশীদার। যদিও ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনার পাশাপাশি পশ্চিমাবিরোধী সম্মেলনগুলোতে অংশ নিচ্ছে।

এদিকে জনসংখ্যার দিক থেকেও বিশ্বের এক নম্বর দেশ ভারত। এক্ষেত্রে চীনকে টপকে গেছে এশিয়ার এই উদীয়মান অর্থনীতির দেশটি। সম্প্রতি ভারত লিথিয়াম খনির সন্ধান পেয়েছে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধাতু, যা দিয়ে ব্যাটারি তৈরি করা হয়।

বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে ভারতের অর্থনীতি কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে। অন্যদিকে সংকুচিত হচ্ছে চীনের অর্থনীতি।

আরও পড়ুন>কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে তাইওয়ানের চারপাশে চীনের সামরিক মহড়া

কিন্তু ভারতে এত বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও রয়েছে বেশ কিছু বাধা। এর মধ্যে অন্যতম হলো আমদানির ক্ষেত্রে রক্ষণশীল মনোভাব। অর্থাৎ আমদানি বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ অথবা বিধিনিষেধ জারি করা।

রক্ষণবাদের ক্ষেত্রে ভারতের একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালে ভারত তার বাজার উন্মুক্ত করে। দেশটি ১৯৯০ সালে গড় শুল্ক ৮০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০০৮ সালে ১৩ শতাংশে নামিয়ে আনে। ২০১৪ সালে ভারতে ক্ষমতায় আসে নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুরু হয় ‘মেইক ইন ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইন’। আমদানিতে বাড়ানো হতে থাকে শুল্ক, যা বর্তমানে গড়ে প্রায় ১৮ শতাংশ। সম্প্রতি কম্পিউটার ও ল্যাপটপ আমদানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারত। এক্ষেত্রে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে।

ভারত সরকার মনে করে কর্মসংস্থান তৈরি ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আমদানি কমানো অপরিহার্য। বিশেষ করে চীন থেকে আমদানি কমানো। যুক্তরাষ্ট্রের মতো চীনকে সন্দেহের চোখে দেখে ভারত। সীমান্ত বিরোধ তো রয়েছে। তাছাড়া কয়েক দশক ধরে চীনের টানা প্রবৃদ্ধিতে দেশটি ঈর্ষান্বিত।

যদিও ভারতের কৌশল এখনো ঠিকভাবে কাজ করছে না। ২০২২ সালে ভারতের জিডিপিতে উৎপাদনখাতের অবদান ছিল ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ, যা ২০১৫ সালের ১৫ দশমিক ৬ শতাংশের চেয়ে কম। একই সঙ্গে ১৯৬৭ সালের পর সর্বনিম্ন।

ভারত চীনের কাছ থেকে ভুল শিক্ষা নিচ্ছে। মূলত গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে সমন্বিত হয়ে দ্রুত সমৃদ্ধ হয়েছে চীন। ভারতের মতো চীন কখনোই বৈশ্বিক বাণিজ্যে সন্দিহান ছিল না।

আরও পড়ুন>যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে

যাইহোক চীনের সংকটময় অর্থনীতি রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদের সীমা প্রকাশ করতে শুরু করেছে। তাই অনুকরণীয় উদাহরণ হতে পারে দক্ষিণ কোরিয়া। ১৯৭০ সালের পর দেশটি দ্রুত উন্নতি করেছে। রপ্তানিমুখী উৎপাদনখাতে দেশটি প্রণোদনা দিয়েছে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। অর্থাৎ বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসেনি। দেশটি বুঝতে পেরেছিল মূলধনী পণ্যের প্রবাহ সীমাবদ্ধ করা মানে বিপরীত উৎপাদনশীলতা। কারণ সেরা ইনপুটগুলো আমদানি করলে উৎপাদকরা লাভবান হবে। ভারত কম্পিউটার আমদানির ওপর যে বিধিনিষেধ জারি করেছে সেটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

১৯৯০ সালের সংস্কারের আগে ভারত তার ‘লাইসেন্স রাজের’ জন্য বেশ পরিচিত ছিল। কারণ তখন সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো কিছুই বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না। উন্মুক্ত নীতি পরিহার করে ভারত যদি আবার সেই পুরোনো ব্যবস্থায় ফিরে যায় তাহলে অর্থনীতি থেকে সুবিধা নিতে ব্যর্থ হবে। ফলে এর মূল্য দিতে হবে দেশটির জনগণকে।

এমএসএম