ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

বিচ্ছেদ হয়েছিল বাবা-মায়ের, ট্রুডোর জীবনেও কেন একই পরিণতি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০১:২৩ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০২৩

দীর্ঘ ১৮ বছরের সংসারজীবনের ইতি টানলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার স্ত্রী সোফি গ্রেগরি ট্রুডো। দুজনের মধ্যে ‘অর্থবহ ও কঠিন’ আলাপ-আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। তবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় এ বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এ দম্পতি।

ইনস্টাগ্রামের এক পোস্টে ট্রুডো ও সোফি বলেছেন, বিচ্ছেদের পরেও তারা ‘একটি ঘনিষ্ঠ পরিবারের মতো থাকবেন, যার ভিত্তি হবে সম্মান ও ভালোবাসা’।

আরও পড়ুন>> সংসার ভাঙছে ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী সানা মারিনের

ট্রুডোর অফিস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই দম্পতি বিচ্ছেদ চুক্তিতে সই করলেও তাদের এখনো একসঙ্গে জনসমক্ষে দেখা যাবে।

jagonews24

কানাডার অন্যতম বিখ্যাত রাজনীতিবিদ জাস্টিন ট্রুডো। ২০১৫ সালে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। সাবেক মডেল ও টিভি উপস্থাপিকা সোফির সঙ্গে ২০০৫ সালে গাঁটছড়া বাধেন ৫১ বছর বয়সী এ নেতা। তাদের সংসারে তিন সন্তান রয়েছে- জ্যাভিয়ার (১৫), এলা গ্রেইস (১৪) এবং হার্ডিন (৯)। 

আরও পড়ুন>> যার জন্য বিচ্ছেদ, তার সঙ্গেই বাগদান সারলেন জেফ বেজোস

কানাডীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিচ্ছেদের জন্য যেসব আইনগত ও নৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন, সেগুলো নিশ্চিত করতে তারা কাজ করছেন এবং সেগুলো চলমান রেখে তারা এগিয়ে যাবেন। আগামী সপ্তাহে তারা পরিবার হিসেবে ছুটি কাটাতে যাবেন বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে বিবৃতিতে।

jagonews24

এ বিষয়ে অবগত একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, বিচ্ছেদের পর সন্তানরা বাবা-মায়ের যৌথ হেফাজতে থাকবে। ট্রুডো ও সন্তানেরা থাকবেন অটোয়ায় অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন রিডো কটেজে। ২০১৫ সাল থেকে সেখানেই বসবাস করছেন তারা।

আরও পড়ুন>> বিশ্বের দুই শীর্ষ ধনীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণ কে এই নারী?

আর ৪৮ বছর বয়সী সোফি অটোয়াতেই পৃথক বাসায় চলে যাবেন। তবে বাচ্চাদের যতটা সম্ভব স্বাভাবিক লালন-পালন নিশ্চিত করতে রিডো কটেজে নিয়মিত যাতায়াত থাকবে তার।

প্রেম থেকে বিয়ে, বিয়ে থেকে বিচ্ছেদ
জাস্টিন ট্রুডো ও সোফির মধ্যে প্রথম দেখা হয়েছিল ছোটবেলাতেই। ট্রুডোর ছোটভাই মাইকেলের সহপাঠী ছিলেন সোফি। বড় হওয়ার পরে ২০০৩ সালে একটি অনুষ্ঠানে আবারও সাক্ষাৎ হয় তাদের। ওই অনুষ্ঠানটি একসঙ্গে সঞ্চালনা করেছিলেন তারা। তারপর ধীরে ধীরে জমে ওঠে প্রেম। পুনর্মিলনের দু’বছর পরেই বিয়ে করেন ট্রুডো-সোফি।

jagonews24

২০১৫ সালে জাস্টিন ট্রুডো যখন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তখন এই দম্পতি ভোগ ম্যাগাজিনে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখানে ট্রুডো জানিয়েছিলেন, সোফি গ্রেগরির সঙ্গে প্রথম দেখার দিন তিনি বলেছিলেন, আমার বয়স ৩১ বছর এবং এই ৩১ বছর ধরে আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।

আরও পড়ুন>> দ্বিতীয়বার ঘর ভাঙছে বিশ্বের ষষ্ঠতম ধনীর

বিয়ের পর দেশ-বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-আয়োজনে নিয়মিত একসঙ্গে দেখা যেতো ট্রুডো-সোফিকে। সদা হাস্যোজ্জ্বল এ যুগলকে বাইরে দেখে অন্তত সুখী দম্পতিই মনে হতো।

jagonews24

যদিও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই দুজনের মধ্যে টানাপোড়েন ছিল বলে নিশ্চিত করেছিলেন ট্রুডো নিজেই। ২০১৪ সালে নিজের আত্মজীবনী কমন গ্রাউন্ডে তিনি লিখেছিলেন, আমাদের বিয়ে নিখুঁত নয়। কঠিন উত্থান-পতনের মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাদের।

আরও পড়ুন>> মেলিন্ডার সঙ্গে বিচ্ছেদের পেছনে বিল গেটসের সাবেক প্রেমিকা?

গত বছর বিয়েবার্ষিকীতে সোফি ট্রুডোও দাম্পত্য জীবনে টানাপোড়েনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ইনস্টাগ্রামে তিনি লিখেছিলেন, আমরা রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের ভেতর দিয়ে গেছি, শক্তিশালী ঝড় মোকাবিলা করেছি, আরও অনেক কিছু একসঙ্গে পার হয়েছি এবং এটি এখনো শেষ হয়নি। দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক অনেক দিক থেকেই চ্যালেঞ্জিং।

jagonews24

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ যুগলকে একসঙ্গে খুব কমই দেখা গেছে। এ বছর রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক এবং গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে কানাডায় স্বাগত জানানোর সময় একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল ট্রুডো-সোফিকে।

আরও পড়ুন>> বিল-মেলিন্ডা ছাড়াও বিশ্বের ৫ ব্যয়বহুল বিয়েবিচ্ছেদ

জাস্টিন ট্রুডো হচ্ছেন কানাডার দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন বিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিলেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন বিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেওয়া প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জাস্টিন ট্রুডোরই বাবা। ছয় বছর একসঙ্গে থাকার পর ১৯৯৯ সালে পিয়েরে ট্রুডো ও মার্গারিট ট্রুডো বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা
কেএএ/