পঞ্চায়েত অফিসে আটকে গেলো কুকুর, মুক্তি পেতে উপ-প্রধানকে ফোন
পঞ্চায়েত অফিসে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘুম ভাঙার পর দেখে অফিস বন্ধ, বাইরে থেকে তালা দেওয়া। বের হতে না পেরে মাথায় বাজ ভেঙে পড়ার জোগাড়। বাধ্য হয়েই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানের কাছে দিলো ফোনকল। সন্ধ্যায় উপ-প্রধান এসে অফিসের তালা খুলে বের করে আনলেন সাহায্যপ্রার্থীকে।
ভাবছেন এ আর এমন কী ব্যাপার? এরকম তো অনেক সময়ই ঘটে। কিন্তু ব্যাপারটা আপনি যেমন ভাবছেন, তেমন নয়। পশ্চিমবঙ্গে এর আগে এমন ঘটনা হয়তো আর ঘটেনি। কারণ পঞ্চায়েত অফিসে তালাবন্দি হয়ে পড়েছিল কোনো মানুষ নয়, বরং একটি কুকুর। আর ওই কুকুরটিই কল দেয় পঞ্চায়েত উপ-প্রধানকে।
আরও পড়ুন: একটি মশার দেখাও মেলে না যে দেশে
শনিবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়া নামক গ্রামে। সিনেমার মতো এ চিত্রপটে নায়ক হচ্ছেন গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান বিশ্বজিত নাগ। মূলত তার মোবাইলেই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে একটি কল যায়। সেই কল পেয়েই তিনি বুঝতে পারেন ফোনের অপর প্রান্তে কোনো মানুষ নয়, রয়েছে একটি কুকুর।
ঠিক কী ঘটেছিল?
এ বিষয়ে উপ-প্রধান বিশ্বজিত নাগ বলেন, প্রতিদিনের মতো শনিবারেও পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ হওয়ার পর আমি বাড়ি ফিরে যাই। আমার নিজস্ব মোবাইল নম্বরটি অফিসের টেলিফোনের সঙ্গে হটলাইন করা। মানে কোনো ব্যক্তি রিসিভার তুলে ডায়াল না করলেও, সয়ংক্রিয়ভাবে আমার মোবাইলে কল ডাইভার্ট হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ঘরে কিছু না পেয়ে উল্টো ৫০০ টাকা রেখে গেলো ‘মানবিক’ চোর!
আরও পড়ুন: সিংহী খুঁজতে হলিউডি কায়দায় অভিযান, মিললো বুনো শুয়োর
সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় হঠাৎ আমার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। দেখি, সেটা পঞ্চায়েত অফিসের নম্বর। আমি তো চমকে যাই। বার দুয়েক হ্যালো বলি, কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে কোনো সাড়া নেই। ঠিক কয়েক মুহূর্ত পর আমি কুকুরের কান্নার আওয়াজ পাই। আমি বুঝতে পারি, কুকুরটি কোনো একটা সমস্যায় পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, সঙ্গে সঙ্গে চাবি নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে যাই। তালা খোলার পর শার্টার তুলতেই কুকুরটি বেরিয়ে আসে। আমাদের অফিসে প্রচুর পথকুকুর খায়, বিশ্রাম করে। আমিও তাদের খেতে দিই।
কিন্তু কল গেলো কী করে?
এ প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া গেছে। অফিস বাইরে থেকে তালাবন্ধ বুঝতে পেরে কুকুরটি সারা ঘর চষে বেড়াচ্ছিল। একপর্যায়ে কোনোভাবে ল্যান্ডলাইনের রিসিভারের তারে তার পা পড়ে যায়। তাতে রিসিভারটি নড়ে ওঠে ও তখনই সিস্টেম অনুযায়ী বিশ্বজিতের কাছে কল চলে যায়।
ডিডি/এসএএইচ