প্রেমের টানে ভারতে পাকিস্তানি নারী, ফিরিয়ে না দিলে হামলার হুমকি!
২৬/১১ এর ধাঁচে হামলার হুমকি পেলো মুম্বাই পুলিশ। প্রেমের টানে ভারতে চলে আসা পাকিস্তানি গৃহবধূ সীমা হায়দারকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো না হলে, এ হামলা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। এদিকে, এ ঘটনার পর পরই মুম্বাইজুড়ে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কে ও কোথা থেকে ফোনটি এসেছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মুম্বাই পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বুধবার (১২ জুলাই) রাতে ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে একটি ফোনকল আসে। সেসময় এক ব্যক্তি উর্দুতে বলেন, সীমাকে পাকিস্তানে ফেরত না পাঠালে মুম্বাইয়ে আবারও ২৬/১১ দেখতে হবে। আর এর জন্য দায়ী থাকবে উত্তরপ্রদেশ সরকার। এই বলে কল কেটে দেন ওই ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে ভারতে গিয়ে ‘প্রতারণার শিকার’ বাংলাদেশি তরুণী
এ ঘটনায় পরপরই নড়েচড়ে বসে রাজ্য পুলিশ। জরুরি বৈঠকে বসেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। সেই সঙ্গে পুরো মুম্বাইজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এরই মধ্যে এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে মুম্বাই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, কেউ ভয় দেখানোর জন্য এই কল দিয়েছিলেন। তবে, এ নিয়ে ঢিলেমি দিতে নারাজ তারা। খুব শিগগিরই কলকারীকে গ্রেফতার করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছে মুম্বাই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
সীমা একজন পাকিস্তানি গৃহবধূ। কিছুদিন আগে আগে অনলাইন গেম পাবজি খেলার সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয় উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডা নিবাসী শচীন নামে এক যুবকের। পরিচয় পরে প্রেমে পরিণতি পায়। এরপর প্রেমিকের টানে চার সন্তানকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। একপর্যায়ে নেপাল সীমান্ত হয়ে গ্রেটার নয়ডায় প্রবেশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: তদন্তের মুখে নিজ মোবাইলের পাসওয়ার্ড ভুলে গেলেন বরিস!
বেআইনিভাবে ভারতে অনুপ্রেবেশের জন্য সীমাকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় প্রেমিক শচীনকেও। কিন্তু কয়েকদিন আগে তাদের মুক্তি দেন আদালত। বর্তমানে গ্রেটার নয়ডায় প্রেমিকের সঙ্গেই বসবাস করছেন সীমা। তিনি পাকিস্তানে ফিরে যেতে ইচ্ছুক নয় বলে জানিয়েছেন। ভারতে থেকে শচীনের সঙ্গেই নতুন করে সংসার বাঁধতে চান। তবে তার সন্তানরা চাইলে পাকিস্তানে ফিরে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নিজেকে এরই মধ্যে ভারতীয় বলেও দাবি করে বসেছেন সীমা। তার দাবি, অন্তর থেকে তিনি ভারতীয় সংস্কৃতি ও হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে ফেলেছেন। সচিনের পরিবারের কথা ভেবে নিরামিষ খেতেও শুরু করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলায় বাধা, বাবার নামে থানায় অভিযোগ মেয়ের
জানা গেছে, সীমার স্বামী দুবাইয়ে একটি নির্মাণসংস্থায় কাজ করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সন্তানদের নিয়ে সীমার ভারতে আসার খবর জানতে পারেন তিনি। স্ত্রী ও সন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আবেদন জানিয়েছেন সীমার স্বামী। এর মধ্যেই হামলার হুমকি দেওয়া হলো।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ