খেলতে খেলতে কানের দুল গলায় আটকে প্রাণশঙ্কায় ৯ মাসের শিশু
পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি:
খেলতে খেলতে মায়ের কানের দুল মুখে পুরে নিয়েছিল নয় মাসের শিশু হিমেল। সেই দুল আটকে যায় তার খাদ্যনালীর মুখে। ফলে তৈরি হয় মরণ-বাঁচন পরিস্থিতি। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে শিশুটি।
এ অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে কী করতে হবে বুঝতে পারছিল না তার পরিবার। পরে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরাও কিছু করতে পারেননি। তারা বাচ্চাটিকে দ্রুত মালদায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
সেই অনুযায়ী শিশুটিকে নেওয়া হয় মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে এক্স-রে করে দেখা যায়, তার শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর মুখে আটকে রয়েছে ধাতব কানের দুল।
আরও পড়ুন>> অ্যাডিনোভাইরাসে আরও পাঁচ শিশুর মৃত্যু
এ অবস্থায় দ্রুত পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে চিকিৎসদের দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় শেষপর্যন্ত বিনা অস্ত্রোপচারেই শিশুটির গলা থেকে বের করে আনা হয় কানের দুলটি।
মালদা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক উৎপল জানা, গণেশ গাইন, শুভজিৎ সরকার, এম এ রহমান, মোহম্মদ রফিকুলসহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ওই শিশুর প্রাণ বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। শেষপর্যন্ত ‘সফল’ অস্ত্রপচার সম্ভব হয়। আপাতত হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রয়েছে শিশুটি।
আরও পড়ুন>> চুরির সন্দেহে ছেলেকে ছাদে উল্টো ঝোলালেন বাবা
মালদা মেডিকেল কলেজের কান, নাক, এবং গলা (ইএনটি) বিশেষজ্ঞ গণেশ চন্দ্র গাইন বলেন, মাত্র নয় মাস বয়সী শিশুটিকে অজ্ঞান করা ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এক্ষেত্রে ওষুধের মাত্রা সামান্য কম-বেশি হলে জীবনহানির আশঙ্কা থাকে।
চিকিৎসক উৎপল জানা বলেন, বাচ্চারা যা হাতে পায়, তা মুখে দেয়। সেভাবেই এই শিশুর খাদ্যনালী ও শ্বাসনালীর মুখে একটি কানের দুল আটকে গিয়েছিল। এতে খাওয়ার সমস্যা হয়, সেই সঙ্গে শ্বাস নিতে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় আরও ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তবে ঝুঁকি নিয়ে গলা থেকে কানের দুল বের করায় বাচ্চাটিকে বাঁচানো গেছে।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিশুটির নাম হিমেল সোরেন। তার মা মিনতি মুর্মুর বলেন, বোনের সঙ্গে খেলছিল ছেলেটি। খেলতে খেলতে কানের দুল খেয়ে ফেলে। ফলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ও যন্ত্রণায় কাঁদতে শুরু করে হিমেল। আমরা তাকে মালদা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসি। চিকিৎসকরা বিনা অস্ত্রোপচারে কানের দুলটি তার গলা থেকে বের করে দিয়েছেন। এখন আমার হিমেল সুস্থ। আমি চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাই।
আরও পড়ুন>> শিশুদের জন্য নতুন আতঙ্ক অ্যাডিনোভাইরাস
কেএএ/