ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারের ওপর ইইউ’র নতুন নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৯:২২ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীসহ জান্তা সরকারের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওপর ষষ্ঠ দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নতুন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৯ কর্মকর্তা, জান্তা সরকারের জ্বালানি মন্ত্রী, কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও সেনাবাহিনীকে জ্বালানি, অস্ত্র-তহবিল সরবরাহকারী কয়েকটি বেসরকারি কোম্পানি। সব মিলিয়ে দেশটির ৯৩ জন ব্যক্তি ও ১৮টি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইইউয়ের এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

আরও পড়ুন>> জান্তা সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ চার দেশের নতুন নিষেধাজ্ঞা

ইইউয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মিয়ারমার সেনাবাহিনীকে বিমান হামলা ও অস্ত্র-সরঞ্জাম সরবরাহ সীমিত করা। পাশাপাশি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে ইইউ জানায়, অভ্যুত্থানের জন্য দায়ী ও  সহিংসতার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন, তাদের সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। ইইউ যৌন সহিংসতা, নাগরিক সমাজের কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও বেসামরিক নাগরিকদের নিপীড়নসহ অধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন>> জান্তা সরকারকে অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করছে ১৩ দেশের কোম্পানি

ইইউয়ের নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মিয়ানমারের জ্বালানি মন্ত্রী মিও মিন্ট, সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল মং মং আই, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মো অং ও সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহকারী তিনটি সংস্থার প্রধান রয়েছেন। এছাড়া মেজর জেনারেল কো কো মং, কাচিন রাজ্যের আঞ্চলিক সামরিক কমান্ডার, ইয়াঙ্গুনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মায়ো মিন্ট রয়েছেন।

নিষেধাজ্ঞার তালিকায় মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের রাজনীতিবিদ ও প্রশাসকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যারা ২০২২ সালের জুলাই মাসে চারজন গণতন্ত্রপন্থি কর্মী হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গণহত্যা, বিমান হামলা ও বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে কাজ করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় তাদের এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন>> মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

মিয়ানমারের ছায়া জাতীয় ঐক্য সরকার ইইউয়ের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। এদিকে, মিয়ানমারের মানবাধিকার গোষ্ঠী বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকের নির্বাহী পরিচালক আনা রবার্টস বলেন, ইইউ সঠিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

আনা রবার্টস আরও বলেন, ইইউ সঠিক রাস্তায় থাকলেও, নিষেধাজ্ঞাগুলো খুব ধীরগতিতে কার্যকর হচ্ছে। রাজস্ব, অস্ত্র ও সরঞ্জামের উৎস, সরবরাহ বন্ধে ধীরগতির ফলে প্রতিনিয়তই মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকার উৎখাত করার সময় নোবেলজয়ী সু চি গ্রেফতার হন। সে সময় জান্তা সরকার ক্ষমতা দখল করলেও, দেশটির সিংহভাগ জনগণ তা মেনে নেয়নি।

আরও পড়ুন>> নির্বাচন নিয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠকে মিয়ানমারের জান্তা সরকার

ক্ষমতা দখলের পর তীব্র বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এখনও কিছুদিন পরপরই বিদো্রহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর সদস্যদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

স্থানীয় মনিটরিং গ্রুপগুলো বলছে, মিয়ানমারে সেনা অভূত্থানের পর সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। অভিযান চালিয়ে অনেককে আটক করারও অভিযোগ ওঠে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন দেশটির সেনাদের নির্যাতনে। শুধু তাই নয়, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে মিয়ানমারের অর্থনীতি।

আরও পড়ুন>> নির্বাচন দেওয়ার আগে মিয়ানমার জান্তার কঠোর আইন

সূত্র: আল-জাজিরা

এসএএইস