ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

ভারতে নিখোঁজ কুয়েতি নারীর খোঁজ মিললো বাংলাদেশে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০:৪৯ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি

চিকিৎসার জন্য ভারতে আসা এক কুয়েতি নারীর খোঁজ মিলেছে বাংলাদেশে। কলকাতা পুলিশ বলছে, ৩১ বছর বয়সী ওই নারী এ বছরের জানুয়ারিতে চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেছিলেন। সঙ্গে তার ভাইও ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই ওই নারী কলকাতা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান।

চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশে ওই নারীর খোঁজ মেলার পরই দিল্লির কুয়েতি দূতাবাসে বিষয়টি জানায় কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নাম না প্রকাশের শর্তে কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তা বিষয়টি এ গণমাধ্যমকর্মীকে জানান। 

আরও পড়ুন>> আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্পে স্থগিতাদেশের শুনানি ২০ ফেব্রুয়ারি

জানা যায়, নিখোঁজ হওয়ার পর ওই নারীর ভাই আলিপুর পুলিশের কাছে সাহায্য চান। এরপর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন, ওই নারী বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এক পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে পৌঁছান তিনি।

কলকাতা পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, ওই কুয়েতি নারীর খোঁজ মেলার পরই ভারতের কুয়েতি দূতাবাস থেকে বাংলাদেশের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়। এরপরই তদন্তে নামে বাংলাদেশ পুলিশ। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির একটি বাসা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে বাংলাদেশ পুলিশ তাকে সে দেশের কুয়েত কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে।

আরও পড়ুন>> পি কে হালদার আরও ১২ দিনের কারা হেফাজতে

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, ২০ জানুয়ারি ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় আসেন ওই নারী। পূর্ব কলকাতার একটি পাঁচতারকা হোটেলে ওঠেন তারা। পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ত্বক সংক্রান্ত সমস্যার চিকিৎসা নেওয়া শুরু করেন ওই কুয়েতি নারী।

চিকিৎসার পাশাপাশি কলকাতার বিশেষ পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখতে থাকেন তিনি। সে ধারাবাহিকতায় ২৭ জানুয়ারি ভাইকে নিয়ে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় যান ওই নারী। একপর্যায়ে সেখান থেকেই আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খোঁজাখুজির পরও বোনের খোঁজ না পেয়ে আলিপুর থানায় যান ভাই, ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের খুলে বলেন সব।

আরও পড়ুন>>  স্বাদে নামিদামি রেস্তোরাঁকেও টেক্কা দেয় কলকাতার পাইস হোটেলগুলো

নিখোঁজের অভিযোগ পেয়েই তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, ওই নারীর মোবাইলে থাকা সিমকার্ড। মোবাইলে কুয়েতি সিমকার্ড থাকায় কিছুতেই তার অবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্য নেওয়া হয়। সেগুলো খতিয়ে দেখা যায়, আলিপুর চিড়িয়াখানার বাইরের গেট থেকে একটি হলুদ রংয়ের ট্যাক্সিতে করে এক পুরুষের সঙ্গে ওই এলাকা ছাড়েন ওই নারী।

ওই পুরুষের পরনে ছিল স্যুট, মুখে মাস্ক ও মাথায় একটি টুপি। স্বাভাবিকভাবে ওই পুরুষকে শনাক্ত করাটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এরপর ওই ট্যাক্সির গতিপথ পর্যালোচনা করা হয়। দেখা যায়, চিড়িয়াখানা থেকে ট্যাক্সিটি মধ্য কলকাতার নিউমার্কেট এলাকার মার্কুইস স্ট্রিটে গিয়ে থামে।

আরও পড়ুন>> বিজেপি কোনোদিনই মুসলিম বিদ্বেষী ছিল না: মিঠুন চক্রবর্তী

এরপর সেখান থেকে আরেকটি ট্যাক্সি নিয়ে ওই অজ্ঞাত পুরুষ ও কুয়েতি নারী চলে যান উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার বনগাঁর কাছাকাছি বাংলাদেশ সীমান্তে। এরপর থেকে তাদের আর ভারতীয় ভূখণ্ডের কোথাও দেখা যায়নি। সঙ্গে সঙ্গে ওই পুরুষের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়।

পরে তাদের চেহারার বর্ণনা ও প্রায় শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পুলিশ ওই পুরুষের একটি ছবি উদ্ধার করে। সেটা দেখে আর তথ্য অনুসন্ধান করে কলকাতা পুলিশ দাবি করে, ওই পুরুষ সম্ভবত একজন বাংলাদেশি নাগরিক।

আরও পড়ুন>> বিশ্বভারতীর জমি দখলের অভিযোগে আবারও অমর্ত্য সেনকে চিঠি

পরে আলিপুর থানা ও কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি-রাউডি সেকশনের (গুন্ডা দমন শাখা) সদস্যরা বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে কথা বলে তাদের উভয়ের আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করার বিষয়ে নিশ্চিত হন। পরে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে বিষয়টি দিল্লির কুয়েত দূতাবাসে জানানো হয়।

আপাতদৃষ্টিতে ওই পুরুষকে কুয়েতি নারীর প্রেমিক বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কোন জায়গা থেকে তাদের পরিচয় ঘটে, বাংলাদেশের কোন জায়গা থেকে ওই নারীর খোঁজ মেলে, তা বিস্তারিত বলেনি পুলিশ।

আরও পড়ুন>> মৃত স্ত্রীর সিলিকনের মূর্তি তৈরি করলেন স্বামী

এদিকে, ওই নারীর সন্ধান ও তাকে উদ্ধারে সহায়তা করায় কলকাতা পুলিশের ভুয়সী প্রশংসা করে কুয়েতি দূতাবাস থেকে একটি প্রশংসাপত্র পাঠানো হয়েছে।

 এসএএইচ