হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় ‘যুদ্ধকে’ দায়ী করলেন জেলেনস্কি
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, উপমন্ত্রীসহ ১৪ জনের মৃত্যুর জন্য দুর্ঘটনা নয়, বরং যুদ্ধকে দায়ী করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সরাসরি রাশিয়ার নাম না নিলেও তিনি বলেছেন, ‘যুদ্ধের সময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে না’।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে রাখা বক্তব্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এই বিয়োগাত্মক ঘটনাটি যুদ্ধের পরিণতি। এদিন রুশ আক্রমণ ঠেকাতে দ্রুত আরও অস্ত্র পাঠাতে মিত্রদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার কিয়েভের বাইরে ব্রোভারিতে একটি নার্সারির কাছে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। এতে প্রাথমিকভাবে ১৮ জন নিহত হওয়ার কথা জানানো হলেও পরে তা সংশোধন করে ১৪ জন বলা হয়। এ ঘটনায় ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেনিস মোনাস্টিরস্কি, একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এবং সচিব প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে।
৪২ বছর বয়সী মোনাস্টিরস্কি ছিলেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির পুরোনো রাজনৈতিক উপদেষ্টাদের একজন। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নিহত ইউক্রেনীয়দের মধ্যে তিনিই সর্বোচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তি।
মোনাস্টিরস্কির মৃত্যু কিয়েভ সরকারের জন্য বড় আঘাত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ যুদ্ধের সময় নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং পুলিশ বাহিনী পরিচালনার মতো অতিজরুরি কাজের ভার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর।
মস্কোর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হতাহতের বিষয়ে জনগণকে সবশেষ তথ্যগুলোও জানাতেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোনাস্টিরস্কি। যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনীয়দের কাছে একটি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের উপপ্রধান বলেছেন, মোনাস্টিরস্কি যুদ্ধের একটি ‘হটস্পট’ ভ্রমণ করছিলেন। খারকিভের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, মন্ত্রীর দলটি তার সঙ্গে দেখা করতে রওয়ানা হয়েছিল।
হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনা ছাড়া অন্য কিছুর মুখে পড়েছে বলে সরাসরি কোনো ইঙ্গিত দেয়নি ইউক্রেন। তবে এসবিইউ স্টেট সিকিউরিটি সার্ভিস বলেছে, এটি নাশকতা, প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা ফ্লাইটের নিয়ম লঙ্ঘনের মতো কোন কারণ জড়িত কি না সেসব বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে।
এ ঘটনার পর ইউক্রেনের জাতীয় পুলিশ বাহিনীর প্রধান ইহোর ক্লাইমেনকোকে ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই ঘটনাকে ‘হৃদয় বিদারক’ অভিহিত করে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
কেএএ/