ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, মুখ খুললেন গৌতম আদানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০:০২ এএম, ০৮ জানুয়ারি ২০২৩

বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী ভারতের গৌতম আদানির সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, এমন কথা অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। এবার বিষয়টি খোলাসা করলেন গৌতম আদানি নিজেই। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ২২ রাজ্যে তার ব্যবসা রয়েছে, কিন্তু সবগুলো বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

গৌতম আদানি, ইন্ডিয়া টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে তার সাফল্যের যে সমালোচনা করা হয় তার আসলে কোনো ভিত্তি ও প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, বিরোধী-শাসিত কয়েকটি রাজ্যের প্রধানদের সঙ্গেও কাজ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক রাজ্যে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করার চেষ্টা করি। আদানি গ্রুপ আসলে সন্তুষ্ট, কেননা আজ এটি ২২ রাজ্যে কাজ করছে। শুধু তাই নয় এসব রাজ্যের সবকটি বিজেপি শাসিত নয়।’

আদানি বলেন, ‘ আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, কোনো রাজ্য সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আমাদের সমস্যা নেই। আমরা কেরালার বামপন্থি সরকারের সঙ্গে, পশ্চিমবঙ্গে মমতা দিদির সঙ্গে, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে, জগনমোহন রেড্ডির রাজ্যে, এমনকি কেসিআরের রাজ্যে কাজ করছি।’

গৌতম আদানি রজত শর্মা সঞ্চালনায় আপ কি আদালতে হাজির হয়েছিলেন। সেখানে ৬০ বছর বয়সী আদানি বলেন, ‘আমি আপনাকে বলতে চাই, আপনি কখনই মোদীজির কাছ থেকে কোনো ব্যক্তিগত সাহায্য পেতে পারেন না। আপনি তার সঙ্গে জাতীয় স্বার্থে নীতির বিষয়ে কথা বলতে পারেন, কিন্তু যখন একটি নীতি প্রণয়ন করা হয়, এটি সবার জন্য, শুধু আদানি গোষ্ঠীর জন্য নয়।’

আদানি আরও বলেন, ‘তার বহু-বিলিয়ন-ডলারের গ্রুপটি ব্যাপকভাবে লাভবান হওয়ায়, ব্যাংক ও সাধারণ মানুষের সঞ্চয় দুর্বল করে দেওয়ার বিষয়ে একটি ভুল ধারণা রয়েছে। তিনি জানান, গত সাত-আট বছরে, আমাদের আয় বেড়েছে ২৪ শতাংশ এবং আমাদের ঋণ বেড়েছে ১১ শতাংশ। তিনি যোগ করে বলেন, আমাদের সম্পদ আমাদের ঋণের চার গুণ।’

আদানি ৯০ মিনিটের ওই শোতে ব্যাখ্যা করেন, তিনি মনে করেন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী বারবার তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেন সেটি ‘রাজনৈতিক ব্যবসার অংশ’। তিনি রাজস্থানে কাজ করার কথাও তুলে ধরেন যেটি গান্ধীর কংগ্রেস পার্টি শাসিত।

Adani-file-2.jpg

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ করা আমাদের স্বাভাবিক কর্মসূচি। আমি মুখ্যমন্ত্রী অশোক গোহলতের আমন্ত্রণে রাজস্থানের বিনিয়োগকারীদের সম্মেলনে গিয়েছিলাম। পরে, রাহুল জিও রাজস্থানে আমাদের বিনিয়োগের প্রশংসা করেন। আমি জানি, রাহুল গান্ধীর নীতিগুলো উন্নয়নবিরোধী নয়।

আদানি আরও বলেন, সমালোচকরা বিশেষ করে যারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে তার সম্পর্কের বাতাস বইছে, তারা এই সত্যটিকে উপেক্ষা করেন যে কংগ্রেস যখন দেশের দায়িত্বে ছিল তখন তার সাফল্য শুরু হয়।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবনে তিনটি বড় ব্রেক পেয়েছি। প্রথম, ১৯৮৫ সালে রাজীব গান্ধীর শাসনামলে, যখন এক্সিম পলিসি আমাদের কোম্পানিকে একটি গ্লোবাল ট্রেডিং হাউসে পরিণত করার অনুমতি দেয়। দ্বিতীয়ত, ১৯৯১ সালে, যখন পিভি নরসিমহা রাও এবং ড. মনমোহন সিং অর্থনীতি দ্বার খুলে দেন এবং আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে প্রবেশ করি। সবশেষে, তৃতীয়ত গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীর ১২ বছরের দীর্ঘ শাসনের সময়...। তিনি বলেন, আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি এটি একটি খুব ভালো অভিজ্ঞতা ছিল।’ তিনি জোর দিতে চেয়েছিলেন যে, ‘গুজরাট বিনিয়োগকারী-বান্ধব, আদানি-বান্ধব নয়।’

গত বছরে, আদানির সম্পদ অন্য যেকোনো বিলিয়নেয়ারের চেয়ে বেশি বেড়েছে। আদানি গ্রুপের মোট সম্পদ ২০০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে রয়েছে সবুজ জ্বালানি, বন্দর, খনি, বিমানবন্দর ও বিশাল অবকাঠামো প্রকল্প। আদানি বলেন, তার কোম্পানি কখনই এসবের জন্য বিড না করে কোনও চুক্তি করেনি এবং তাই বিশেষ সুবিধা পাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিডিং বা নিলাম ছাড়া একটি প্রকল্পও পাইনি। আমাদের আদানি গোষ্ঠীর এই দর্শন আছে, বিডিং ছাড়া কোনো প্রকল্পকে স্পর্শ করবে না, তা হোক বন্দর, বিমানবন্দর, রাস্তা বা পাওয়ার হাউস। তিনি আরও বলেন, এমন একটি অভিযোগও নেই যে আমরা ‘ম্যানেজ করেছি’। এমনকি রাহুল জিও বিডিং প্রক্রিয়ার সঙ্গে কারচুপির কোনো অভিযোগ করেননি, উল্লেখ করেন আদানি।

গৌতম আদানির সাফল্যের সূত্র কি, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কঠোর পরিশ্রম, কঠোর পরিশ্রম এবং কঠোর পরিশ্রম।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএনআর/এমএস