ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

২০২৩ সালেও ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ অব্যাহত থাকবে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:৩৭ পিএম, ০৫ জানুয়ারি ২০২৩

করোনা মহামারির পর এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ কিংবা ঘরে বসে অফিস করার মডেলটি রয়ে গেছে। অনেকের ধারণা, চলমান অর্থনৈতিক মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরও কোম্পানিগুলো ওয়ার্ক ফ্রম হোম অব্যাহত রাখবে ও তুলনামূলক কমসংখ্যক কর্মী দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করবে।

এ ক্ষেত্রে দুটি মতবাদ রয়েছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, বাড়ি বসে অফিস করার সুবিধা রয়েছে ও অধিকাংশ মানুষ ঘরোয়া পরিবেশে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।

অন্যদিকে, অনেকে মনে করেন, অফিস ছাড়া কাজের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয় না ও কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি মানেই অফিসে বসে কাজ করা।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মার্সারের কর্মশক্তি রূপান্তরকারী নেতা মেলিসা সুইফট বলেন, অফিসের ধরন কেমন হওয়া উচিৎ তা নিয়ে মতের অমিল রয়েছে। তবে অধিকাংশ কোম্পানি বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগকে একটি অপশন হিসেবে রেখেছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলছে, এখন পর্যন্ত যেসব সমীক্ষা চালানো হয়েছে তাতে দেখা গেছে, চলতি বছরও বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ অব্যাহত থাকবে।

ওয়াশিংটনের গবেষণা সংস্থা গ্যালাপের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ বছরও বিভিন্ন কোম্পানির প্রায় ৭৫ শতাংশ কর্মীর মধ্যে বাড়ি থেকে কাজ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে কিংবা হাইব্রিড মডেলে অর্থাৎ অফিস-বাড়ি দুই জায়গা মিলিয়ে কাজ করবেন।

যেসব কারণে মনে করা হচ্ছে ২০২৩ সালেও ওয়ার্ক ফ্রম হোম অব্যাহত থাকবে:

১. কর্মী ধরে রাখা

দূরবর্তী কাজ কর্মী ধরে রাখার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২০২২ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো ও ইনস্টিটিউটো টেকনোলজিকো অটোনোমো ডি মেক্সিকো’র গবেষকরা একটি সমীক্ষা চালান। তাতে উঠে আসে, সুবিধা অনুযায়ী অফিস ও বাড়ি উভয় জায়গায় কাজের সুযোগ কর্মীদের সন্তুষ্টি ও উত্পাদনশীলতা বহুগুনে বাড়িয়েছে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গার্টনারের গবেষণা পরিচালক ক্যাটলিন ডাফি বলেন, কর্মচারীরা বাড়ি থেকে কাজ করে নতুন মাত্রার পরিপূর্ণতা অনুভব করেছেন ও কোম্পানিগুলোর পক্ষে এ সুযোগ বাতিল করার কোনো উপায় ছিল না।

jagonews24

২. নিয়োগ

দূর থেকে কাজ কোনো একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটি বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে নিয়োগ পাওয়ার দুয়ার খুলে দেয়। এটি এ ধরনের কাজের প্রধান একটি সুবিধা। বিশেষ করে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ালে এ পদ্ধতিতে সহজেই যোগ্য লোককে বেছে নেওয়া যায়।

কাজের ক্ষেত্রে এ ধরনের নমনীয়তা কোম্পানির জন্য বৈচিত্র্য, সমতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা ইত্যাদি ইতিবাচক বিষয়গুলো অর্জনে সাহায্য করে। বিশেষত, বিশেষভাবে সক্ষম, কর্মজীবী মা-বাবা ও বর্ণবাদের শিকার হওয়া লোকেরা দূর থেকে কাজ করার অসাধরণ সুবিধার কথা উল্লেখ করেছেন।

৩. খরচ কমাতে সহায়তা করা

সচারচর অফিসের জন্য একটি ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট বা জায়গার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগ একটি কোম্পানিকে এ ঝামেলা থেকে মুকি্ত দিতে পারে ও খরচ কমাতে উল্লেখযোগ্যভাবে সাহায্য করতে পারে।

ইয়েলপ ইনকর্পোরেটেডের মতো কোম্পানি নিউ ইয়র্ক, শিকাগো ও ওয়াশিংটনের অফিসগুলোকে বন্ধ করে দিয়ে নিয়োগ ও কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছে।

অন্যদিকে, অ্যাপভিত্তিক রাইডিং শেয়ার কোম্পানি লিফট এটির সান ফ্রান্সিসকো, নিউ ইয়র্ক, সিয়াটেল ও ন্যাশভিলের অফিসগুলো প্রায় অর্ধেক জায়গা ভাড়া দিয়ে দিয়েছে।

অন্যান্য বড় কোম্পানি যেমন, মেটা ও অ্যামজন অফিস সম্প্রসারণের পরিকল্পনাগুলোকে পুনর্বিবেচনা করে দেখছে।

৪. বিপরীত ঝুঁকি

ব্লুমবার্গ বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি দূর থেকে কাজ করার সুযোগ পুরোপুরি বাতিল করে দেয় তাহলে সেটির নির্বাহীরা ক্ষতি ও মানহানির ঝুঁকিতে পড়বেন। উদাহরণস্বরূপ শুধু টুইটারের কথায় বলা যায়।

ইলন মাস্ক টুইটারের মালিকানা কিনে নেওয়ার পর দূর থেকে কাজ করার মডেলটি বাতিল করে দেন। এর বিপরীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির অধিকাংশ কর্মচারী ইলনের ওপর মনক্ষুন্ম হয়েছিলেন ও চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমন পরিস্থিতিতে কিছু কর্মীদের ফিরিয়ে আনার জন্য ইলন মাস্কে বেশ নমনীয় হতে হয়েছিল।

সূত্র: ব্লুমবার্গ

এসএএইচ/জিকেএস