পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন কথা বলা ঠিক হয়নি: কলকাতায় রাসিক মেয়র
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যকে অপ্রাসঙ্গিক বলেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেছেন, এমন কথা তার বলা ঠিক হয়নি। কথা বলার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে কর্মসূচি পালন করা হয় ভারতের কলকাতা প্রেস ক্লাবে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে রাসিক মেয়র এসব কথা বলেন।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার, তা করতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি। আমি ভারতবর্ষে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে।
এরপরই মন্ত্রীর এ বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। বিরোধীদলগুলো মন্ত্রীর এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে। বিএনপি তো লুফে নেয় এই বক্তব্য। তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে বাস্তব চিত্র বলে উল্লেখ করে।
চট্টগ্রাম নগরের জেএম সেন হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বক্তব্য দেন
কলকাতায় রাসিক মেয়র বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত যেভাবে বাংলাদেশকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তা বার বার বললেও সেই ঋণ শোধ করা যাবে না।
আগামী ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশ-ভারতের আরও উন্নতি হবে বলে জানান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত অর্থাৎ দুই দেশের উন্নতি ঘটলে তার প্রভাব প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ওপর পড়ে।
মেয়র আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা তার সঙ্গেই আছি, সে কারণে আমরা চাই একাত্তরের যুদ্ধের সময় ভারত যেভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে, সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে, আগামী দিনেও ঠিক সেইভাবে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এসময় আলোচনায় তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়ে কথা বলেন খায়রুজ্জামান লিটন। আগামী সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারেও আশা প্রকাশ করেন।
মেয়র বলেন, তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হলে তা উভয় দেশের জন্য ভালো। বাংলাদেশের মানুষ আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির দিকে। যখনই কোনো সফরে দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতে যান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসেন, তখন বাংলাদেশের মানুষ আশা করে যে তিস্তার সমাধান হবে।
আগামী নির্বাচনে বিএনপির যোগদানের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে রাজশাহীর মেয়র জানান, তার আশা বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কারণ বর্তমান নির্বাচন কমিশন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার কাজের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন অত্যন্ত সতর্কভাবে এবং শক্ত হাতে তারা নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবেন।
বাংলাদেশ ঋণের ফাঁদে পড়ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে মেয়র জানান, এই আশঙ্কা অমূলক।
তিনি আরও জানান, আগামী বছরের জুন মাসে সিটি নির্বাচন। পরে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে তার আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এসময় কলকাতা প্রেস ক্লাবে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, রাজশাহী আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনি ও মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ সংগ্রাহক কলকাতার সাংবাদিক দিলীপ চক্রবর্তী, কলকাতা দূরদর্শনের প্ৰাক্তন প্রবীণ সাংবাদিক স্নেহাশিস সুর ছাড়া আরও অনেকে।
জেডএইচ/জিকেএস