ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

চীনে গৃহহীনদের জীবন আরও কঠিন করে তুলেছে মহামারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:২৯ পিএম, ১৫ মে ২০২২

চীনে করোনা মহামারি গৃহহীনদের জীবন আরও কঠিন করে তুলেছে। জিয়াংয়ের মতো অনেকেই আছেন যারা ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু গত মাসে হেইনিং প্রদেশে করোনার প্রাদুর্ভাবের পেছনে তাকে দায়ী করা হয়েছিল।

ওই শহরে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। জিয়াং যেখানে ঘুমাতেন সেখানকার কিছু জুতা এবং গণশৌচাগার থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এসব নমুনায় করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এমনকি জিয়াংয়ের দেহেও করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।

কন্টাক্ট ট্রেসারদের সঙ্গে সহযোগিতা না করার অভিযোগে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা করছে। তার মতো কয়েক লাখ মানুষ যারা চীনের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় জীবন কাটান, মহামারি যেন পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বিভিন্ন গ্রাম থেকে শহরে এসেছেন কাজের খোঁজে।

অনুমোদন না থাকায় তারা আবাসনের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হন। সরকারি কর্মকর্তাদের কাছেও তারা যেন চক্ষুশূল। তাদের জন্য তেমন কিছুই করা হয় না। তাদেরকে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্ররোচনা দেওয়া হয়।

চীনে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে সামাজিক ভাবে তাদের নানা রকম প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। একজনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়লে পুরো শহরেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এমন পরিস্থিতি গৃহহীনদের জন্য সবচেয়ে কঠিন হয়ে ওঠে। হেইনিং প্রদেশে জিয়াংয়ের জন্য করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারপরেও লোকজন তাকেই দোষারোপ করছে। তাকে ‘বিষ রাজা’ বলেও ডাকা হচ্ছে।

গুয়াংঝৌয়ের সান ইয়াত-সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন যে, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সময় ওই শহর থেকে গৃহহীনদের তাড়ানোর প্রচেষ্টা আরও তীব্র হয়েছে। রাস্তায় ঘুমিয়ে থাকা লোকজন জানিয়েছে, পুলিশ তাদের বিশ্রামের জায়গাগুলো পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখেছে। এক ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, প্রত্যেকেই আমাদের নিয়ে ভীত কারণ তাদের ধারণা আমরা ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছি।

করোনার কারণে সব দিক থেকেই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গৃহহীনরা। তাদের আয়ের উৎস কমে গেছে। দেশজুড়ে লকডাউনের কারণে তারা কোনো ধরনের সহযোগিতা পাননি। এমনকি তারা যেসব কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

কোভিড বিধিনিষেধের কারণে বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতা কমে গেছে। লকডাউনের কারণে সাংহাইয়ের একটি এনজিও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়। তারা খাবার, আইনি পরামর্শ এবং বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়ে আসছিল। বেইজিংয়ের একটি দাতব্য সংস্থাকেও একই পথে হাঁটতে হয়েছে।

অনেক গৃহহীনই শহর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও এ বিষয়ে সরকারি কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বেইজিংয়ে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত একটি কেন্দ্রের এক কর্মী বলেন, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা ব্যবহার করা লোকের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। যদিও স্থানীয় কর্মকর্তারা এ বিষয়টিতে গুরুতর কোনো সমস্যা হিসেবে দেখছেন না।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট

টিটিএন/জেআইএম