মহামারির ঢেউ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্তুগাল
করোনাভাইরাসের অভিঘাতে পর্যটন শিল্পসমৃদ্ধ দেশ পর্তুগালেও বেকারের হার বাড়তে থাকে। মহামারি শুরুর দিকে দেশটির খাবার হোটেল, বিপণিবিতান ছাড়াও বেশি সমাগমস্থল এলাকায় বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। পরে বড় বড় শিল্পকারখানা ও ছোট-মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো কম শ্রমিক দিয়ে উৎপাদন করতে থাকে। বিপুল সংখ্যক কর্মীও ছাঁটাই করা হয়।
এতে স্থানীয় নাগরিকসহ অভিবাসীরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। নিম্নমুখী হয়ে যায় দেশর অর্থনীতি। তবে থেমে থাকেননি তারা। বেকারত্বের কষাঘাত ঘুচিয়ে কর্মে ফিরেছেন অনেকেই। বৈশ্বিক মহামারির ঢেউ কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে কৃষি উৎপাদনভিত্তিক দেশটি।
দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের (আইএনই) তথ্যমতে, ২০২০ সালে মহামারি করোনার কারণে বেকারত্ব বহন করা কর্মজীবীদের প্রায় অর্ধেক ২০২১ সালে তাদের কর্মের ব্যবস্থা করতে পেরেছে যা ২০২০ সালে বেকার হওয়ার শতকরা ৪৮.৮ ভাগ। এখনো বেকারত্ব বহন করছে শতকরা ৩১.৩ ভাগ, বাকি ১৯.৯ শতাংশ কর্মজীবী তাদের অবস্থান নিষ্ক্রিয়ভাবে রেখেছেন।
শ্রম বাজারের চিত্রে ওঠে আসে কঠিন এক বাস্তবতার দৃশ্যপট, যেখানে দেখা যায় বেকারত্ব বয়ে বেড়াচ্ছে ১ লাখ ৯ হাজার ৬০০ জন যা বেকারত্বের শতাংশে ৩১.৩ ভাগ যা ২০২১ সালে এসেও তার একই অবস্থান ধরে রেখেছে। অন্যদিকে বেকারত্ব সামলাতে সক্ষম হন ১ লাখ ৭১ হাজার ৩০০ জন, আর নিষ্ক্রিয় অবস্থানে (বহুবিধ উদ্দেশ্যে নিজেকে কর্মজীবীদের তালিকা থেকে দূরে সরানো) ঊনসত্তর হাজার নয়শত জন।
শতকরা ৫৭.২ ভাগ কর্মজীবী লোকজন যারা ২০২০ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বেকার হয় ২০২১ সালে এসে তারাও তাদের স্থায়ী চাকরিতে নিজেকে নিয়োজিত করতে সক্ষম হয়েছিলো। একই সময়ে বাকি ৩২.১ শতাংশ বেকার লোকজন যারা ১২ মাস কিংবা তার বেশি সময় ধরে বেকারত্ব বহন করেছিলেন তারাও শেষ পর্যন্ত তাদের স্থায়ী কাজের ব্যবস্থা করেন।
২০২১ সালের মাঝামাঝিতে এসে যারা কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন তারা বছরের শেষ পর্যন্ত কর্মের সন্ধানে চেষ্টা চালিয়েছে যার সংখ্যা শতকরা ৫২.৮ ভাগ (এক লাখ আটষট্টি হাজার দুইশত জন), ২০২১ সালের শেষ নাগাদ কর্মে যুক্ত হয়েছে শতকরা ২৭.১ ভাগ যা ছিয়াশি হাজার পাঁচশত জন এবং নিষ্ক্রিয় অবস্থান ধরে রেখেছেন চৌষট্টি হাজার জন যা শতকরা ২০.১ ভাগ।
পর্তুগাল সরকার শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। কিছুদিন আগে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলেও সঠিক পরিকল্পনায় সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে চলছে টিকাদান কর্মসূচি। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগালেও সর্বাধিক মানুষের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
এমআরএম/এমএস