মধ্যপ্রাচ্যে আগুন নিয়ে খেলছেন সৌদি যুবরাজ
জার্মান গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যক্তি। একই সঙ্গে ২৯ বছর বয়সী বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা-প্রিয়, আগ্রাসী ও উচ্চাভিলাষী হিসেবেও অভিহিত করা হয়েছে তাকে। ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত বছরের শেষের দিকে দেড় পৃষ্টার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিএনডি। সেখানে বলা হয়েছে, হস্তক্ষেপের একটি আবেগপ্রবণ নীতি গ্রহণ করেছে সৌদি সরকার। স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত সৌদি বাদশাহ সালমানের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান। সৌদি এ যুবরাজকে ক্ষমতাপ্রেমিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মধ্যপাচ্য এবং আরব উপসাগরীয় অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার পেছনে এই সৌদি যুবরাজের নীতিই দায়ী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় যে যুদ্ধ শুরু করেছে সৌদি আরব তা শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। আর এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমন এক ব্যক্তি যিনি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাধর হওয়ার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছেন।
সালমান সৌদি বাদশাহ হওয়ার পর কয়েক মাসের মধ্যেই যুবরাজ সালমানের ক্ষমতা নাটকীয়ভাবে বাড়ানো হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর পাশাপাশি দেশটির জাতীয় জ্বালানি কোম্পানির প্রধানের দায়িত্ব নেন প্রিন্স বিন সালমান। এছাড়া অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন বিষয়ক পরিষদের প্রধানেরও দায়িত্ব পান তিনি। তাকে ডেপুটি যুবরাজ ঘোষণা করা হলেও প্রতিদ্বন্দ্বী যুবরাজ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মাদ বিন নায়েফের ওপর তার কর্তৃত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের সাবেক একজন মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জার্মানির ওই গোয়েন্দা সংস্থাকে বলেন, অতীতে সৌদি আরবের নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতো ও বিভিন্ন উপায় চালু রাখতো। এছাড়া যেসব সরকারকে তারা পছন্দ করতো না তাদেরকে এড়িয়ে চলতো। কিন্তু বর্তমানে এর উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। এর পেছনে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নীতিকেই দায়ী করেছেন তিনি।
সৌদি আরবে ২ জানুয়ারি শিয়া নেতা নিমর আল-নিমরের মৃত্যদণ্ড কার্যকর করা হয়। এরপর দুই দেশের মাঝে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। তেহরানের সৌদি দূতাবাস ও কনস্যুলেটে হামলার ঘটনার পর ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব। আরব উপসাগরীয় ও সৌদি আরবের মিত্র আরো কয়েকটি দেশ তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদ করে।
এ ঘটনার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়টিকে মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করতে আগুন নিয়ে খেলার সঙ্গে তুলনা করছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
এসআইএস/আরআইপি