পশ্চিমবঙ্গে বিধিনিষেধ: অনিশ্চয়তায় পর্যটন খাতের কয়েক লাখ মানুষ
করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই বিধিনিষেধের প্রভাব পড়ছে রাজ্যের কয়েক লাখ মানুষের জীবনে। তাদের সবাই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পর্যটনশিল্পের সঙ্গে জড়িত। এ অব্স্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন পর্যটনশিল্পকে স্বভাবিক করা যায় সেই দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, ৫০ শতাংশ পর্যটক নিয়ে গাইডলাইন মেনে খোলা হোক পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
করোনার কারণে এমনিতে গত প্রায় দুই বছর উত্তরবঙ্গের পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছিল। কিন্তু চলতি মৌসুমে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই আবারও উত্তরবঙ্গে পর্যটকদের ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মতো। ডিসেম্বরে পর্যটকদের ভিড়ে আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কয়েক লাখ মানুষ।
তবে চলতি মাস থেকে আবারও রাজ্যে করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে রাজ্য সরকার। বিধিনিষেধে রাজ্যের সব সাফারি পার্ক এবং পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর এতেই মাথায় হাত পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটরদের।
এই মৌসুমে পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুরো। কিন্তু এই ঘোষণার পর সেই ভিড় এক ধাক্কায় প্রায় পর্যটকশূন্য অবস্থায়। বছরের শেষ থেকে চলতি মৌসুমে বুকিংও হয়ে গিয়েছিল প্রায় ৯০ শতাংশ হোটেল-রিসোর্ট। সেখানে বিধিনিষেধের কারণে প্রায় সমস্ত বুকিং বাতিল। এই মুহূর্তে যেসব পর্যটক রয়েছেন তারাও বাড়ি ফেরার পথে। সবমিলিয়ে আবারও চরম ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
এ অবস্থায় উত্তরবঙ্গের এই শিল্পকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পর্যটন কেন্দ্রগুলো যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৫০ শতাংশ পর্যটক নিয়ে খোলার ব্যবস্থা করা হয় সেই আবেদন জানিয়ে পাঁচ জেলার জেলা শাসকদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পাঠানো হবে।
ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সন্দীপন ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, উত্তরবঙ্গে এই পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কয়ক লাখ মানুষ। যাদের এই শিল্পের মাধ্যমে রুটিরুজি চলে। এই বিধিনিষেধে প্রচুর মানুষের রুটিরুজিতে টান পড়বে। যেখানে শপিংমল, সিনেমা হলসহ সবক্ষেত্রেই ৫০ শতাংশ লোক নিয়ে খোলা থাকছে, সেখানে পর্যটন কেন্দ্রগুলো ৫০ শতাংশ পর্যটক নিয়ে খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
ইএ/এমএস