জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিশুর আত্মহত্যা করোনাকালে
করোনাভাইরাস মহামারি শুধু মানুষের শারীরিক ক্ষতিই নয়, ভয়ংকর প্রভাব ফেলেছে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও। সম্প্রতি তারই নজির দেখা গেছে জাপানে। করোনাকালে সেখানে যত শিশু আত্মহত্যা করেছে, তা দেশটির ইতিহাসেই সর্বোচ্চ। গত বুধবার (১৩ অক্টোবর) জাপানি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে।
জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জরিপ বলছে, করোনাভাইরাস মহামারিতে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ২০২০ শিক্ষাবর্ষে (এপ্রিল থেকে মার্চ) দেশটিতে চার শতাধিক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। আসাহি পত্রিকার তথ্যমতে, ১৯৭৪ সালে জাপানে এ ধরনের হিসাব রাখা শুরুর পর থেকে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক শিশুর আত্মহত্যার ঘটনা।
এনএইচকে জানিয়েছে, জাপানের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি, হয়রানি, আত্মহত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতি বছর জরিপ চালায় দেশটির সরকার। গত বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে এ সংক্রান্ত সবশেষ প্রতিবেদন।
জরিপে দেখা যায়, ২০২০ শিক্ষাবর্ষে জাপানে এলিমেন্টারি থেকে হাইস্কুল পড়ুয়া অন্তত ৪১৫ শিক্ষার্থী নিজের প্রাণ নিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০০ জন বেশি। এই শিক্ষাবর্ষে জাপানে এলিমেন্টারি স্কুলের সাতজন, জুনিয়র হাইস্কুলের ১০৩ জন ও সিনিয়র হাইস্কুলের ৩০৫ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
বেড়েছে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। করোনাকালে দেশটিতে এলিমেন্টারি ও জুনিয়র হাইস্কুলগুলোর প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে।
জাপানি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষার্থী বিষয়ক বিভাগের প্রধান ইগুচি আরিচিকা বলেছেন, জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, মহামারিজনিত কারণে স্কুল ও গৃহস্থালী পরিবেশের পরিবর্তন শিশুদের আচরণে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তাদের আত্মহত্যার সংখ্যা বৃদ্ধি খুবই দুঃখজনক।
তিনি জানান, শিশুদের সহযোগিতা চাওয়ায় উৎসাহিত করতে এবং যারা স্কুলে যেতে পারছে না তাদের জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে কাজ করছে জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কেএএ/এএসএম