প্যানডোরায় শচীন-শ্রফ-আম্বানিসহ তিন শতাধিক ভারতীয়র নাম
অনৈতিক অর্থ লেনদেনের তথ্য ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে প্যানডোরা পেপারস। এতে নাম এসেছে ভারতের তিন শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির, যাদের মধ্যে রয়েছেন ধনকুবের অনিল আম্বানি, সাবেক ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার, বলিউড অভিনেতা জ্যাকি শ্রফ প্রমুখ। নাম এসেছে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তারও। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত তিনটি ব্যাংকের সঙ্গে ঝামেলার জেরে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনের একটি আদালতে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করেন ভারতীয় ধনকুবের অনিল আম্বানি। এর তিন মাস পর ব্যাংগুলোকে ৭১ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু আদালতে আম্বানি জানান, তার সেই সক্ষমতা নেই। বিশ্বের কোথাও কোনো সম্পত্তি নেই বলেও এসময় দাবি করেন রিলায়েন্স এডিএ গ্রুপের চেয়ারম্যান।
কিন্তু এবার সেই আম্বানিরই বিপুল গোপন সম্পত্তির তথ্য ফাঁস করেছে প্যানডোরা পেপারস। তাদের দাবি, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, জার্সি ও সাইপ্রাসে মোট ১৮টি অফশোর কোম্পানির মালিকানা রয়েছে ভারতীয় এ ব্যবসায়ীর। ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে চালু করা এসব কোম্পানি ১৩০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ নিয়েছে বা বিনিয়োগ করেছে।
প্যানডোরা পেপারসে নাম এসেছে পলাতক হীরা ব্যবসায়ী নীরব মোদীর। বলা হচ্ছে, ২০১৮ সালে নীরব ভারত থেকে পালানোর মাত্র এক মাস আগে তার বোন পুরবী মোদী ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে একটি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন, যা সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানির মাধ্যমে গঠিত ট্রাস্টের ‘করপোরেট প্রটেক্টর’ হিসেবে কাজ করে।
প্যানডোরার তালিকায় নাম রয়েছে ভারতের কোটিপতি উদ্যোক্তা কিরণ মজুমদার শয়ের স্বামী জন ম্যাককালাম মার্শাল শয়ের। তিনি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান বায়োকন লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ চেয়ারপারসন। প্যানডোরা জানিয়েছে, একাধিক অফশোর ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে শেয়ার বিক্রি করেছে বায়োকন।
প্যানডোরার তালিকায় নাম এসেছে বলিউড অভিনেতা জ্যাকি শ্রফেরও। জানা গেছে, শ্রফ নিউজিল্যান্ডে তার শাশুড়ির প্রতিষ্ঠিত একটি ট্রাস্টের প্রধান সুবিধাভোগী এবং ওই ট্রাস্টে ‘উল্লেখযোগ্য অবদান’ রয়েছে তার। সুইস ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে এ ট্রাস্টের এবং সেটি ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত একটি অফশোর কোম্পানিরও মালিক।
তবে তালিকায় যে নামটি সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে তা হচ্ছে ভারতীয়দের ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ শচীন টেন্ডুলকার ও তার স্ত্রী অঞ্জলি। জানা গেছে, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে সাস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে একটি সংস্থার বেনিফিসিয়াল ওনার্স ও পরিচালক পদে রয়েছেন শচীন, অঞ্জলিরা। ২০১৬ সাল থেকে তারা এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। সেখানে নয়টি শেয়ার রয়েছে শচীনের নামে, যার মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাত কোটি রুপি। আর অঞ্জলি টেন্ডুলকারের শেয়ার ১৪টি, যার মূল্য প্রায় ১১ কোটি রুপি।
প্যানডোরা পেপারসের তালিকায় আরও রয়েছেন ভারতের কিছু রাজনীতিবিদ, যাদের মধ্যে কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য। বর্তমানে তারা ভারতীয় তদন্ত সংস্থার নজরদারিতে রয়েছেন।
কেএএ/জেআইএম