জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করলো ইরান
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে জাতিসংঘের পরমাণুবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি বা আইএইএ'র প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। আইএইএ’তে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজেম গরিবাবাদি বলেছেন সংস্থাটির নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখা দরকার।
ইরানের এ প্রতিনিধি বলেন, ইরান জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক টিমের প্রতিবেদন ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতে ইরানকে কেউ বলতে পারে না, যতদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
আইএইএ মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে সবশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, আইএইএ’র প্রতিবেদন বলছে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
এতে আরও বলা হয়, পর্যবেক্ষক দল ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ কারণ অনেক জায়গায় পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে তেহরান যেসব স্থানের নাম জানা যায়নি বা উপযুক্ত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
ইরানের অভিযোগ, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করছেন ইরানের ওপর। যদিও সংস্থাটি বলছে, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি ৬০ শতাংশ বাড়িয়েছে, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও।
মঙ্গলবার কাজেম গরিবাবাদি আরও বলেন, ইরান এর আগে পরমাণু সমঝোতার জন্য আইএইএ’র সঙ্গে তিন মাসের একটি অস্থায়ী চুক্তি করেছিল যা ছিল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ওই সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার পর তেহরান আর সেটি মেনে চলতে বাধ্য নয়।
২০১৫ সালে ইরান বিশ্বের ছয়টি পরাশক্তির সাথে তার পরমাণু কর্মসূচি সংক্রান্ত একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে করতে সম্মত হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন এবং রাশিয়া, অর্থাৎ পি ফাইভ প্লাস ওয়ান নামে পরিচিত পরাশক্তিগুলো ছিল চুক্তির অংশীদার। তবে ২০১৫ সালের চুক্তির পর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে ইরান। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ইরান সংবেদনশীল পরমাণু কর্মকাণ্ড সীমিত করতে রাজি এবং দেশটির বিরুদ্ধে আনা অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেবার শর্তে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের পরমাণু কর্মকাণ্ড পরিদর্শনে অনুমতি দেয়।
আইএইএ'র পরিদর্শকরা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করতে পারবেন- সে ব্যাপারে সম্মতিও দেয় তেহরান। সেসময় বারাক ওবামা প্রশাসন আস্থা রাখে যে এর অধীনে ইরান কোনো ধরনের গোপন পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালাবে না। ইরানও তা নিশ্চিত করে। তবে পরে ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় ২০১৮ সালে।
সূত্র : আল জাজিরা, পার্সটুডে
এসএনআর/জেআইএম