ডেল্টায় ধুঁকছে অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় চলতি বছর দৈনিক রেকর্ড সংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে শনিবার (৭ আগস্ট)। করোনার অতিসংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়াচ্ছে দেশটির রাজ্যগুলোতে। সবচেয়ে বেশি খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জনবহুল তিনটি রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া ও কুইন্সল্যান্ডে। আল জাজিরার খবরে এ তথ্য জানা গেছে।
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে তিনটি রাজ্যের প্রায় দেড় কোটি মানুষকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে, যা অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ।
শনিবার দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যা এ বছরে সর্বোচ্চ। নিউ সাউথ ওয়েলসে ৩১৯ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত করা গেছে একদিনে। এদিকে, সিডনিসহ এর আশপাশের লোকজনকে দুইশো কিলোমিটারের বাইরে যেতে মানা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এসব এলাকায় কড়া লকডাউন চলছে কয়েক সপ্তাহ ধরে।
নিউ সাউথ ওয়েলসে ৩৪৫ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে ৫৬ জন রয়েছেন ইনিটেনসিভ কেয়ারে এবং ২৩ জনকে ভ্যান্টিলেটর দেয়া হচ্ছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্র্যাড হ্যাজার্ড হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও সাধারণ মানুষ বিধিনিষেধ মানছেন না। তিনি রাজ্যের বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকার আবারও আহ্বান জানান। রাজ্যাটিতে আগামী ২৮ আগস্ট পর্যন্ত জারি রয়েছে কড়া লকডাউন।
পাশ্ববর্তী ভিক্টোরিয়া রাজ্যেও দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে গেছে, যা এ বছরে সর্বোচ্চ। ২৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে সেখানে। যদিও এখনো ৭ দিনের লকডাউন চলছে রাজ্যটিতে।
ভিক্টোরিয়া রাজ্যের প্রধান ডেন অ্যান্ড্রিউস সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে না যান সে কথাও বলেছেন তিনি। অ্যান্ড্রিউস ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়াচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৯৩৭ জন। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার মানুষ। তবে টিকাদান কর্মসূচিতে অনেক পিছিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে ১৬ বছরের বেশি বয়সী মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেল্টার চোখ রাঙানিতে অনেকটা এলোমেলো অবস্থায় পড়েছে অস্ট্রেলিয়া। ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের কোভিড জিরো পলিসি। সংক্রমণ ঠেকাতে না পারলে পরিস্থিতি কতটা বেগতিক হবে তা নিয়ে শঙ্কা চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টদের।
এসএনআর/এইচএ/এমএস