ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতি: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২১

তালেবান ও সেনাদের মধ্যকার চলমান সংঘাতে আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। বুধবার এক বিবৃতিতে এমনটা জানিয়েছে আফগানিস্তানে নিযুক্ত জাতিসংঘের সহায়তা মিশন। বিবৃতিতে বলা হয়, দেশটিতে মারাত্মকভাবে বেড়েছে হত্যা, নিপীড়ন ও বৈষম্য। একই সঙ্গে তৈরি হয়েছে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার মত বিষয়গুলো। এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে সম্পৃক্তদের যথাযথ জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আফগানিস্তানে যেসব নারী ও মেয়েরা মারাত্মক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে তাদের প্রতি বাড়তি নজর দিতে হবে। বৈষম্য দূরীকরণে ব্যবস্থা নিতে হবে।

দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনরোধ ও বেসামরিক লোকজনের ক্ষতি অবসানের একমাত্র উপায় হল তালেবান ও সরকারের মধ্যকার শান্তি আলোচনা। দুই পক্ষের যথাযথ আলোচনার মাধ্যমে বহুদিন ধরে চলা দ্বন্দ্বের অবসান সম্ভব।

এদিকে শুধু আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় কুন্দুজ প্রদেশে সেনাদের সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১২ হাজারের বেশি মানুষ। প্রদেশের রাজধানী কুন্দুজ শহরের নিয়ন্ত্রণ করছে আফগান সেনারা। কিন্তু শহরটি দখলে চেষ্টায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান। চলমান সংঘাতে প্রাণহানির শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পাওয়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, কুন্দুজ নগরীর শহরতলীতে সরকারি সেনারা তালেবান হামলা প্রতিহত করার জন্য গোলাগুলি চালিয়ে যাচ্ছে। প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি রাস্তার দুই পাশে তাবু খাটিয়ে বাস্তুহারা মানুষেরা অবস্থান নিয়েছে। তাবুগুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানি সংকট।

আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি অবস্থানের বিরুদ্ধে হামলা শক্তিশালী করেছে তালেবান। বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করলে সশস্ত্র আন্দোলন বন্ধ করবে বলে গত দুই দশক ধরে তালেবান দাবি করে আসলেও বিদেশি সেনা প্রত্যাহার শুরু করার পর তারা গোটা আফগানিস্তানের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে লড়াই শুরু করেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের শতকরা ৮৫ ভাগ এলাকা নিজেদের দখলে নেয়ার দাবি করেছে তালেবান যদি কাবুল সরকার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। এ

দিকে আফগানিস্তানে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিস্ফোরণে চারজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও পাঁচজন। হতাহত সবাই দেশটির বেসামরিক লোক। পুলিশ বলছে, বিস্ফোরণের ধরনটি এখনও পরিস্কার নয়। এ ঘটনায় কারা জড়িত তাও শনাক্ত করা যায়নি। তালেবানসহ কোন পক্ষই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি। এর আগে গত মে মাসে কাবুলে একটি মেয়েদের স্কুলের পাশে বিস্ফোরণে ৬৩ জন নিহত হয়েছিল। আহত হয়েছিল আরও ১৫০ জন।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারসহ তালেবানের আরও দুটি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এই হামলার জন্য আল কায়দার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করা হয়। এরপর থেকে আফগানিস্তানে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১১ সাল থেকে চলা যুদ্ধ-সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি আফগান সেনা ও পুলিশ নিহত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ। এছাড়া আরও প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিদেশি সেনা নিহত হয়েছেন।

এ অবস্থায় সম্প্রতি আফগানিস্তান যুদ্ধে ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরই মধ্যে আফগানিস্তান থেকে বেশিরভাগ মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সূত্র: তোলো নিউজ

এএমকে/জেআইএম