মাস্ক পরায় বাধ্যবাধকতা তুলে নিচ্ছে ইতালি
বাইরে বের হলে আর মাস্ক পরতে হবে না ইতালির নাগরিকদের। আগামী ২৮ জুন থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ ও হাসপাতালে রোগীর চাপ কমতে থাকায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনা মহামারির শুরুতেই ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইতালি। কিন্তু কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে দেশটিতে এখন সংক্রমণ অনেকটাই কমতে শুরু করেছে। খবর আল জাজিরার।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় গত বছরের অক্টোবরে ইতালিতে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। সে সময় সংক্রমণ কমাতে সরকারকে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে। মাস্কসহ করোনার বিভিন্ন বিধি-নিষেধ মেনে চলার বিষয়ে বার বার লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে। এর সুফলও পেয়েছে ইতালি। দৈনিক সংক্রমণ এখন অনেকটাই কমেছে। ফলে স্বস্তি মিলেছে।
প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি সরকার গত এপ্রিল থেকেই ধীরে ধীরে কঠোর বিধি-নিষেধ তুলে নেয়া শুরু করেছে। রেস্টুরেন্ট, বার, সিনেমা এবং জিম পুনরায় চালু করার অনুমতি দেয়া হয়েছে এবং দেশজুড়ে স্বাধীনভাবে লোকজনকে চলাফেরার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এখন পর্যন্ত একমাত্র মাস্ক পরার ওপরই বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু সেটাও তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হলো। তবে সর্বত্র মাস্কের ওপর বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হয়নি। গণপরিবহন এবং অভ্যন্তরীণ গণসমাগমে মাস্ক পরতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
লোকজনকে সাথে একটি মাস্ক রাখার পরামর্শও দেয়া হয়েছে যেন তারা বের হলে অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে, সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এবং বিশাল জনসমাগমে মাস্ক পরে নিরাপদ থাকতে পারেন।
আগামী সোমবার থেকেই নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। সংক্রমণের ধীরগতির কারণে ইতালি হোয়াইট জোনে পরিণত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই দেশটির ১৯টি এলাকা হোয়াইট জোনে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। উত্তরাঞ্চলীয় ভেলে ডি’ আওস্তা এখনও হলুদ জোনের আওতাভূক্ত রয়েছে। খুব শিগগিরই ওই এলাকা হোয়াইট জোনের আওতায় চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে ফ্রান্স, স্পেন একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যেই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। করোনার যে কয়েকটি ধরন এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে ভারতীয় ধরন বা ডেল্টা ধরনটি সবচেয়ে বেশি সংক্রামক।
এখন পর্যন্ত ইতালির ২৬ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। অপরদিকে প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের কমপক্ষে একটি ডোজ গ্রহণ করেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯৫ এবং মারা গেছে ২১ জন। এখন পর্যন্ত ইতালিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৪২ লাখের বেশি। এর মধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯১ জন।
টিটিএন/এমএস