মেলেনি শয্যা, হার বন্ধক রেখে দিলেন অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত স্বামীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেছিলেন। তবে হাসপাতালে হন্যে হয়ে ঘুরলেও স্বামীকে ভর্তি করাতে পারলেন না। উল্টে অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া মেটাতে সোনার হার বন্ধক রাখতে হলো ভারতের হুগলির কোন্নগরের এক যুবতীকে।
ওই নারীর অভিযোগ, করোনা রোগীদের পরিবারের অসহায়ত্বের সুযোগে দর হাঁকছে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা প্রদানকারী কয়েকটি সংস্থা। দমদমের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছেন ওই যুবতী। ভাড়া যে বেশি নেয়া হচ্ছে, তা কার্যত স্বীকার করেছে সংস্থাটিও। তবে সংস্থার মালিকের দাবি, কোভিড পরিস্থিতির জন্য ভাড়া বেড়েছে অ্যাম্বুলেন্সের।
পরিবার সূত্রে খবর, কোভিডের উপসর্গ থাকায় তনুশ্রীর স্বামী মেহতাব আলম আনসারিকে হিন্দমোটরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তার কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
মেহতাবের অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকায় শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। এরপর রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। হিন্দমোটরে কোনো সিসিইউ-যুক্ত অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে দমদমের এক বেসরকারি সংস্থায় অ্যাম্বুলেন্সের জন্য যোগাযোাগ করেন তনুশ্রী।
শুক্রবার মেহতাবকে ওই অ্যাম্বুলেন্সে করে হিন্দমোটর থেকে কলকাতায় যান তিনি। তবে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ঘুরেও কোথাও বেড পাননি। হতাশ হয়ে প্রায় ৬ ঘণ্টা পর হিন্দমোটরেই ফিরে আসতে বাধ্য হন তনুশ্রী।
এরপর তার কাছ থেকে ৩৩ হাজার টাকা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া চায় দমদমের ওই সংস্থাটি। তবে সে মুহূর্তে তনুশ্রীর কাছে অত টাকা না থাকায় নিজের সোনার হার বন্ধক রেখে অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া মেটাতে বাধ্য হন তিনি।
বেশি ভাড়া নিয়ে তনুশ্রীর অভিযোগ স্বীকার করে অ্যাম্বুলেন্স সংস্থার মালিক উত্তম ঘোষ বলেন, সিসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া সাধারণ অ্যাম্বুলেন্সের তুলনায় বেশি। সেখানে চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান থাকেন। কলকাতার একাধিক হাসপাতালে ঘুরে রোগীকে নিয়ে হিন্দমোটরে ফিরে আসে অ্যাম্বুলেন্সটি।
তিনি বলেন, সেই ভাড়াই নেয়া হয়েছে। আমাকে বললে হয়তো কিছুটা কমানো যেত। কোভিড পরিস্থিতির জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বেশি হয়েছে।
এমআরএম/এমএস