ফিলিস্তিনের ৬৭ নয়, ইসরায়েলের ৭ জনের জন্য মন কাঁদছে বাইডেনের!
ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলি আগ্রাসন নয়, বরং ইসরায়েলিদের জন্য ফিলিস্তিনিদের দেয়া পাল্টা জবাবে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কপালে। অন্য বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও ইসরায়েল ইস্যুতে পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একই সুরে কথা বলছেন তিনি। ট্রাম্পের মতো বাইডেনও মনে করছেন, ইসরায়েল কেবল আত্মরক্ষার খাতিরেই ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
মাত্র একদিন আগেই বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেছিলেন, নতুন প্রেসিডেন্টের দুর্বলতার কারণেই তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল হামলার শিকার হচ্ছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তার শাসনামলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বজায় ছিল, কারণ তখন ইসরায়েলের শত্রুরা জানত, যুক্তরাষ্ট্র শক্তভাবে ইসরায়েলিদের পাশে রয়েছে আর তারা হামলার শিকার হলে মোক্ষম জবাব দেয়া হবে। কিন্তু বাইডেনের আমলে বিশ্ব ক্রমেই সহিংস এবং অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। এর কারণ বাইডেনের দুর্বলতা এবং ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের অভাব, যা আমাদের মিত্রদের নতুন হামলার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই তার সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন জো বাইডেন। উপরন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কাছে সরাসরি ফোন করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইসরায়েলের দিকে হাজার হাজার রকেট ছোড়া হলে তা থেকে আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে ইসরায়েলের।
বুধবার হোয়াইট হাউস প্রকাশিত এক বিবৃবিতে জানানো হযেছে, নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে জো বাইডেন ‘স্থায়ী শান্তি পুনরুদ্ধারে’ উৎসাহ দিয়েছেন। পাশাপাশি, ইসরায়েলের নিরাপত্তা এবং তার জনগণকে রক্ষার ‘বৈধ অধিকারের’ প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অটল সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জেরুজালেম এবং তেল আবিবের বিরুদ্ধে হামাস ও অন্য ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর’ রকেট হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জো বাইডেন। বিভিন্ন ধর্মের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জেরুজালেমের মতো শহর অবশ্যই শান্তিপূর্ণ থাকতে হবে, এমন বিশ্বাসের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
অর্থাৎ ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান লড়াইয়ে বাইডেন সরাসরি ইসরায়েলিদের পক্ষ নিয়েছেন। গত কয়েকদিনে ইসরায়েলের হামলায় ১৪ শিশুসহ অন্তত ৬৭ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩০০ জনেরও বেশি। বিপরীতে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পাল্টা রকেট হামলায় মারা গেছেন সাতজন, আহত ১০০ জনের কাছাকাছি।
শান্তিকামীদের মতে, বিশ্বে সবার প্রাণ সমান গুরুত্বপূর্ণ হলেও এক্ষেত্রে ফিলিস্তিনের অর্ধশতাধিক নিরীহ মানুষের বদলে ইসরায়েলের সাতজনের মৃত্যুতেই বেশি মন পুড়ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। তার এমন প্রত্যক্ষ সমর্থনে ইসরায়েলিদের আগ্রাসন আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, আল জাজিরা, জেরুজালেম পোস্ট
কেএএ/এমকেএইচ