লকডাউন থেকে মুক্তি পেয়ে উৎসবে মেতেছে স্পেন
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধে দেশজুড়ে ছয় মাসের লকডাউন জারি করে স্পেন সরকার। দীর্ঘদিন পর গত শনিবার মধ্যরাতে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছে দেশটির ১৭টির অধিকাংশ অঞ্চলের মানুষ। লকডাউন শেষ হওয়ার পর থেকে স্পেনে উৎসব চলছে।
লকডাউন তুলে নেয়ায় এখন থেকে স্পেনে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত রেস্তোরাঁ খোলা থাকবে। এক টেবিলে সর্বোচ্চ চারজন বসতে পারবেন, রেস্তোরাঁর ভেতরে শতকরা ৩০ ভাগ আসনে বসা যাবে— এমন নিয়ম থাকলেও এগুলোকে আর বড় করে দেখছেন না স্পেনবাসী।
এখন থেকে ইচ্ছামতো ঘোরা যাবে, ঘরের বাইরে চুটিয়ে আড্ডা দেয়া যাবে। এই আনন্দে ছয় মাসের লকডাউনের শেষের সূচনার আগেই বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নাচ-গান শুরু হয়ে যায়, যেন দেশজুড়ে আগেভাগেই নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার উৎসব শুরু হয়ে গেছে।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই বার্সেলোনার রাস্তায় ভিড় জমে যাওয়ায় কাজে নেমে পড়ে পুলিশ। ফলে ঘণ্টা দুয়েকের জন্য বাড়ি ফিরতে বাধ্য হন এমন দিনের জন্য মুখিয়ে থাকা হাজারো মানুষ। তবে রাত ১২টা বাজতেই আবার ফিরে আসেন তারা। শহরের কোণে কোণে, রাস্তায় রাস্তায় করোনার থাবা থেকে মুক্ত হয়ে খোলা আকাশের নিচে জীবন উপভোগের অনাবিল আনন্দ উদযাপন শুরু হয়ে যায়।
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদসহ অনেক শহরেরই তখন অভিন্ন চিত্র। মানুষের আনন্দে করোনা ভাবনা যেন দেশছাড়া! লকডাউনের ছয় মাসে ১৭টি অঞ্চলের মানুষ নিজের অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেতে পারেননি। শনিবার থেকে আন্তঃআঞ্চলিক ভ্রমণে আর কোনো বাধা নেই।
বার্সেলোনায় ২৮ বছরের দোকান মালিক পলা গ্রেসিয়া বলেন, ‘আসলে তরুণরা দীর্ঘদিন ঘরবন্দি ছিলেন। অবশেষে তারা মুক্ত। গ্রীষ্মকালে বিচের ধারে এই স্বাধীনতা উদযাপন করলেন তারা।’
২৫ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু পুজোল বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাস নিয়ে আমাদের সবার মনই ভীষণ বিষন্ন ছিল। তাই আজ আমরা উল্লাস করছি।’
এদিকে, করোনায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ সংক্রমতি হওয়া এবং প্রায় ৭৯ হাজার মানুষ মারা যাওয়ায় ইউরোপের এই দেশের সব অঞ্চল থেকে এখনো লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়নি। বালেরিক আইল্যান্ডস, ক্যানারি আইল্যান্ডস, নাভারা ও ভ্যালেন্সিয়ার মানুষ এখনো গৃহবন্দি।
এমএসএইচ/এমকেএইচ