মহামারিতে বিশ্বব্যাপী নারীদের আয় কমেছে ৮০ হাজার কোটি ডলার
করোনাভাইরাস মহামারির ফলে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি নারী তাদের চাকরি হারিয়েছেন। এছাড়া শিশুর যত্ন নেয়া ও শিক্ষাক্ষেত্রেও নারীডের ওপর ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে।
অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নতুন এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বব্যাপী নারীদের আয় ৮০ হাজার কোটি ডলার কমে গেছে। এই সংখ্যাটি ৯৮টি দেশের মোট জিডিপি, আমাজনের ৭০ হাজার কোটি ডলারের বাজার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রতিরক্ষা বাজেট ৭২ হাজার ১৫০ কোটি ডলারের চেয়েও বেশি।
অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুশার বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারিতে অর্থনৈতিক পতনের ফলে নারীদের ওপর আরও বেশি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি ঠিক করার পরিবর্তে, সরকারগুলো নারীদের চাকরিকে অদরকারি মনে করেছে। আর এর ফলাফল হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যারা চাকরি করতেন তাদের আয় ৮০ হাজার কোটি ডলার কমেছে।’
প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করে, মোট আয় কমে যাওয়ার অনুমানটি রক্ষণশীল কারণ এর মধ্যে যে কোটি কোটি নারী অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে তাদের আয় হারিয়েছেন সেটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এদের মধ্যে রয়েছেন গৃহকর্মী, বাজারের বিক্রেতা ও গার্মেন্ট কর্মী।
সম্প্রতি কর্মশক্তিতে নারীরা যে অর্জন করেছে তাতে বড় ধরণের ধাক্কা দিয়েছে করোনাভাইরাস।
বৈশ্বিকভাবে, গত বছর নারীরা ৬ কোটি ৪০ লাখ চাকরি হারিয়েছেন। এটি নারীদের মোট চাকরির ৫ শতাংশ। অপরদিকে পুরুষরা চাকরি হারিয়েছেন ৩.৯ শতাংশ।
এই ক্ষতির অর্থনৈতিক ধাক্কা আরও ভয়াবহ।
অক্সফামের নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতা বিভাগের সহকারি পরিচালক মারা বলিস বলেন, ‘২০২০ সালের আগেও আমরা বৈষম্যের (নারীদের ক্ষেত্রে) সংকট দেখেছি এবং এটি এখন বিস্ফোরিত হয়েছে। এটি লিঙ্গ সংবেদনশীল নীতি নির্ধারণের প্রতি মনোযোগের অভাব এবং সংকট মোকাবিলা করতে নারীদেরকে তাদের নিজের ওপর ছেড়ে দেয়া ও আমাদের পদ্ধতিগত ব্যর্থতাগুলোকে হজম করার ফলাফল। এগুলোই আমাদের এদিকে ঠেলে দিয়েছে।’
নারীদের ওপর মহামারির এই ক্ষতিকর প্রভাবের পরিণতি হবে দীর্ঘমেয়াদী। মহামারির আগেও নারীরা কর্মক্ষেত্রে ও মজুরিতে ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হতেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী পুরুষদের আয়ের প্রতি ডলারের ৭৭ সেন্ট আয় করেন নারীরা।
মহামারির আক্রমণ লিঙ্গ বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং লিঙ্গ বৈষম্যভিত্তিক মজুরির ব্যবধানকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
সূত্র : সিএনএন
এমকে/এএসএম