ভারতে করোনা থেকে সুস্থ হয়েও অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে না অনেকের
করোনায় সংক্রমিত হওয়া সত্ত্বেও ভারতে অনেকের শরীরে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বলে সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির অনুপস্থিতি সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের অন্যতম কারণ। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
কোভিড সংক্রমণের পরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এমন ব্যক্তিদের নিয়ে মার্চে একটি সমীক্ষা করেছিল কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)। সমীক্ষার ফলাফল বলছে, ১০৪২৭ জনের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে (সেরোপজ়িটিভ) মাত্র ১০.১৪ শতাংশের দেহে। ১৭টি রাজ্য ও ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সিএসআইআর-এর কর্মীদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সমীক্ষার এই ফলাফলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে না উঠলে শুধু ভ্যাকসিন ও ওষুধের সাহায্যে করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির ‘সক্রিয়তার মেয়াদ’ নিয়েও উদ্বেগে রয়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। গবেষণায় দেখা গেছে, সুস্থ হওয়ার পর শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলো ৫-৬ মাসের মধ্যেই দুর্বল হয়ে গিয়ে কার্যকরিতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে অতীতে আক্রান্ত ব্যক্তি আবার সংক্রমিত হচ্ছেন।
সিএসআইআরের গবেষক শান্তনু সিংহ জানিয়েছেন, গত অক্টোবর থেকে করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু ‘কার্যকরী অ্যান্টিবডি’র অভাবে মার্চে সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করে।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য আংশিক কারফিউ অথবা স্বল্প সময়ের লকডাউনের পথে হাঁটছে। আজ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্নাটক সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, আগামিকাল রাত ৯টা থেকে পরবর্তী ১৪ দিন (১০ মে পর্যন্ত) এই বিধিনিষেধ বলবৎ হচ্ছে। কর্নাটকও বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা আজ ঘোষণা করেছে।
রাত্রীকালীন কারফিউর মেয়াদ বাড়ছে (সন্ধে ৬টা থেকে ভোর ৫টা) পাঞ্জাবেও। মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ জানান, শুক্রবার সন্ধে ৬টা থেকে সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজ্যে লকডাউন কার্যকর হবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়ে গেছে। যত লোকের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তাদের প্রতি চার জনের মধ্যে এক জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮০০ বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
এমকে/এএসএম