ছাত্রীর সঙ্গে বিয়ের চাপ দেয়ায় শিক্ষকের আত্মহত্যা
কোচিংয়ের ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষকের বিয়ে দিতে সালিশি সভা বসানো হয়। বিয়েরও আয়োজন করা হয় জোর করে। এতে অপমান বোধ করেন শিক্ষক। অবশেষে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের গাইসলের ধনতলায় একটি কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন মুজ্জাকির ইসলাম (২৩)। তার মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে কয়েক দফায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা।
অভিযোগ উঠেছে, সপ্তাহখানেক আগে ওই কোচিং সেন্টারে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী মুজ্জাকিরের ঘাড়ে হাত দেয়া অবস্থায় ভিডিও রেকর্ডিং করে। তারপর ওই ছাত্রীকে বিয়ে করার জন্য শিক্ষকের ওপর চাপ তৈরি করা হয়। কিন্তু বিয়েতে রাজি হননি তিনি। তার জেরে ধনতলার কোচিং সেন্টারে ভাঙচুর করে কম্পিউটারে আগুন লাগানো হয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মুজ্জাকির।
এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার গাইসল পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী তৃণমূলের মহম্মদ সাব্বির আহমেদের উদ্যোগে সালিশি সভা বসে। এতে উপস্থিতি ছিলেন ওই পঞ্চায়েতের সদস্যরা। সালিশি সভায় ওই শিক্ষককে বিয়েতে রাজি হতে বলা হয়।
গত রোববার ওই ছাত্রীর বিয়ের আয়োজনও করা হয়। তবে বিয়ে করতে যাননি শিক্ষক। বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গাইসোল রেললাইন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মুজ্জাকিরের মামা হাসালুন হকের অভিযোগ, জোর করে প্রধান ও তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য মুজ্জাকিরকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। ভিডিও ভাইরাল করে বিয়ে করতে চাপ দেয়। সেটা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
ওই শিক্ষকের বাবা দবিরুল ইসলামপুরের অভিযোগ, ‘আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে জোর করে বিয়ে দেয়ার চক্রান্ত চলছিল। সেটা সহ্য করতে না পেরে অপমানিত হয়ে সে রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। দোষীদের শাস্তি চাই।’
পুলিশ সুপার শচীন মক্কার বলেন, ওই শিক্ষকের মরদেহ নিয়ে পথ অবরোধ করা হয় কিছুক্ষণ। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএসএইচ/জেআইএম